কলকাতা: রাজ্যে করোনা মৃত্যুর হার সারা দেশের নিরিখে বেশি বলে নিজেদের পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল কেন্দ্রের পাঠানো আন্তঃমন্ত্রক পর্যবেক্ষক দল৷ এবার রাজ্যে করোনা মৃত্যুর অধিক হার ও দূর্বল পরিকাঠামো এবং লকডাউন নিয়ে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরাসরি তোপ দাগল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক৷ বুধবার রাজ্য সরাকরকে লেখা এক চিঠিতে পর্যবেক্ষক দলের রিপোর্টের উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা সংক্রমণ মোকাবিলার লড়াইয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন৷ রাজ্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষার হার যেমন কম, তেমনই মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগামী বলেও তিনি মন্তব্য করেন৷
বুধবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যসচিবকে লেখা চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন, ‘করোনা মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গের বৈশিষ্ট হল অত্যন্ত কম পরীক্ষার হার এবং সংক্রমণে মৃতের হারে উল্লেখজনক (১৩.২%) বৃদ্ধি, যা দেশের সমস্ত রাজ্যের চেয়ে বেশি।’ পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনের উদ্দেশে তিনি আরও জানিয়েছেন, রাজ্যের এই পরিস্থিতি থেকে করোনা নিয়ন্ত্রণে নজরদারি, রোগ নির্ণয় এবং নমুনা পরীক্ষায় রাজ্য সরকারের সার্বিক গাফিলতি স্পষ্ট হয়েছে৷ করোনা রোধে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আরোপিত লকডাউন বিধি অমান্য করে বাংলায় ক্রিকেট খেলা, নদীতে সমবেত স্নান, বাজারে মাত্রাতিরিক্ত জনসমাবেশ এবং নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে রিকশার চলাচল পুরোদস্তুর বহাল রয়েছে৷ এই সবই কেন্দ্রীয় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সামাজিক দূরত্ব বজায় বিধি লঙ্গ করে চালু রয়েছে বলে তিনি রাজ্য প্রশাসনকে সতর্ক করেছেন৷
বাংলায় কোনও রকম লকডাউন বিধি মানা হচ্ছে না বলে এর আগে একাধিক বার অভিযোগ জানিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর৷ তার জেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর উত্তপ্ত চিঠি বিনিময়ের ঘটনা সম্প্রতি জানা গিয়েছে৷ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এই কারণে অভিযোগ ও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তৃণমূল নেতা ও মন্ত্রীরা৷ গত ২৩ মার্চ প্রথম দফার লকডাউন আরোপ হলে পথে নেমে সামাজিক দূরত্ব বিধি ব্যাখ্যা করতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। কিন্তু তারই পাশাপাশি হাওড়ার টিকিয়াপাড়ায় পুলিশকে গণহেনস্থার মতো ঘটনাও নজরে এসেছে। আবার তার জেরে রাজ্য পুলিশের উদ্যোগে লকডাউনের মধ্যেই সেই টিকিয়াপাড়াতেই সামাজিক দূরত্ব বিধির তোয়াক্কা না করে শান্তিমিছিল করতেও দেখা গিয়েছে৷