নয়াদিল্লি: দেশজুড়ে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি চালুর লক্ষ্যে আরও এক ধাপ এগোল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদির সরকার৷ দীর্ঘ জল্পনার পর অবশেষে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল অনুমোদন দিল নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহদের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা৷ চলতি সপ্তাহে এই বিল পেশ করবে কেন্দ্র৷ বিলটি লোকসভায় সমস্যা না হলেও রাজ্যসভায় তা পাস করানো নিয়ে কোমর বাঁধছে গেরুয়া শিবির৷
জানা গিয়েছে, আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে সংসদে নয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করবে বিজেপি৷ গোটা দেশজুড়ে এনআরসি হবে বলে আগেই সংসদে জানিয়েছেন অমিত শাহ৷ ২০২২ সালের মধ্যে দেশে এনআরসি প্রক্রিয়া শেষ হবে বলে জানিয়েছেন রাজনাথ সিং৷ সূত্রের খবর, বিল নিয়ে দলের নেতাদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন রাজনাথ সং ও অমিত শাহ৷ বৈঠকে ৩৭০ ধারা বিলোপের মতো এই বিল গুরুত্বপূর্ণ বলেও দাবি জানিয়েছেন তিনি৷
কিন্তু, কী আছে এই বিলে? জানা গিয়েছে, এই বিলের মূল কথা, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান সহ কয়েকটি দেশ থেকে আসা হিন্দু, পার্শী, জৈন, বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টান শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে৷ বাদ পড়বেন মুসলমানরা৷ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বা সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট বিল কী তা এক ঝলকে বুঝে নেওয়া যাক৷
১৯৫৫ সালে পাশ হওয়া নাগরিকত্ব বিলের সঙ্গে সংশোধিত বিলের তফাৎ সেরকম কিছু নেই৷ বিলে যা আছে, ত হল, বাংলাদেশ, পাকিস্তান বা আফগানিস্তান থেকে বেআইনি ভাবে আসা মুসলমানরা যেমন অনুপ্রবেশকারী, কিন্তু সেখান থেকে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, পার্শী, শিখ বা খ্রিস্টানদের মতো ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা শরণার্থী৷
ওই বিল যদি আইন তৈরি হয় তবে, ভারত প্রতিবেশি দেশ থেকে আসা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের আশ্রয় এবং নাগরিকত্ব দেবে৷ এই ভাবেই বিচার করা হবে যে, তাঁরা বিপদের মুখে নিজের ধর্ম এবং সম্মান রক্ষা করতেই নিজের দেশ ছেড়ে পালিয়ে এসেছেন৷ অন্যদিকে মুসলমানদের অনুপ্রবেশকারী হিসাবে দেখা হবে৷ তাদের, ফেরত পাঠানো হবে৷
যুক্তি হল, সীমান্তের ওপার থেকে রোজগার বা বাসস্থান খুঁজেতে যদি সেই দেশের ধর্মীয় সংখ্যাগুরুরা আসেন, তা হল অনুপ্রবেশ এবং অপরাধ৷ ধরা হবে, অসৎ উদ্দেশ্য নিয়েই তাঁরা ভারতে এসেছেন৷ অন্যদিকে, ওভারসিজ সিটিজেন কার্ডহোল্ডারা (ওসিসি) যদি কোনও অপরাধমূলক কাজ করেন তাঁদের নথীভুক্তিকরণ বাতিল হবে৷ NRC নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে৷ তৃণমূল কংগ্রেস বলেছে, এই বিল সমর্থন করবে না৷