মুম্বই: মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে এই প্রথম দশেরার ভাষণ দিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে৷ শিব সেনার বার্ষিক ‘বিজয়াদশমী মেলা’ উপলক্ষে স্বতন্ত্র বীর সাভারকর অডিটরিয়াম থেকে একাধিক ইস্যু নিয়ে মুখ খুললেন তিনি৷ রাজ্যপালের সঙ্গে বিবাদ থেকে বিজেপি ও কঙ্গনা রানাউত, একের পর এক তির ছুঁড়লেন তিনি৷ হিন্দুত্ব প্রশ্নে রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারির বিরুদ্ধে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী৷ মুম্বই পুলিশ, শিবসেনা ও আদিত্য ঠাকরের বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য নিয়ে এক হাত নেন কঙ্গনাকে৷ তুলে ধরেন বিজেপি’র ভুলভ্রান্তি৷
আরও পড়ুন- মধূচক্রের পর্দাফাঁস! ৩ নায়িকাকে উদ্ধার করল মুম্বই পুলিশ
এদিন রাজ্যপালের নাম না করেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘হিন্দুত্ব প্রশ্নে আমাদের দিকে আঙুল তোলা হচ্ছে কারণ আমরা এখনও পর্যন্ত কোনও মন্দির গড়ে তুলিনি৷ তিনি আরও বলেন, ‘‘আপনি হিন্দুত্ব নিয়ে কথা বলছেন.. মহারাষ্ট্রে গোসাংস নিষিদ্ধ করা হচ্ছে৷ অথচ গোয়াতে গোমাংসে কোনও আপত্তি নেই৷ এটাই আপনার হিন্দুত্ব?’’ বিজেপি’র আইডোলজিক্যাল মেন্টর রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবতের বক্তব্য তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘মোহন ভগবত বলেছেন, হিন্দুত্ব আর পূজাপাঠ এক নয়। যাঁরা ওঁকে অনুসরণ করেন ও কালো টুপি পরেন (কোশিয়ারি), তাঁদের টুপির নীচে মগজ থেকে থাকলে, ওঁর আজকের বক্তৃতাটা শুনুন।”
এদিকে, সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর যে বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছিল, তাতে ঘৃতাহুতি দিয়েছিলেন কঙ্গনা৷ সরাসরি উদ্ধব-পুত্র আদিত্য ঠাকরের দিকেও আঙুল তুলেছিলেন অভিনেত্রী৷ তার জবাবে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আজ প্রতীকি বারণ নিধন করব৷ একজন রাবণের মুখোশধারী মুম্বইকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সঙ্গে তুলনা করছেন৷ মুম্বই পুলিশকে অপদার্থ বলে মন্তব্য করছেন৷ এখানে নাকি সর্বত্র মাদকাসক্তরা ঘুরে বেড়ায়। তাঁরা আসলে জানেন না যে, এখানে বাড়িতে বাড়িতে তুলসী গাছ লাগানো হয়, গাঁজা নয়। গাঁজার খেত রয়েছে আপনাদের রাজ্যে। মহারাষ্ট্রে নয়।” সেইসঙ্গে মুম্বই পুলিশের ভূয়সী প্রশংসাও করেন তিনি৷ নাম না করেই কঙ্গনাকে বিঁধে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এক জন আত্মহত্যা করেছেন। তিনি বিহারের সন্তান। সেটা হতেই পারে। কিন্তু তার জন্য আপনি মহারাষ্ট্রবাসীদের অপমান করেছেন। আপনি আমার ছেলে আদিত্যকে বদনাম করেছেন। আপনি যা যা বলেছেন সে সব নিজের কাছেই রাখুন। আমরা সব দিক থেকে পরিষ্কার।”
আরও পড়ুন- শহরে করোনায় মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার, নতুন রেকর্ড মুম্বইয়ের
এদিন বিহার নির্বাচনের বিজেপি’র ইস্তেহারের প্রসঙ্গও উঠে আসে তাঁর মুখে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সবার আগে বিহারের মানুষকে বিনা পয়সায় করোনা টিকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে৷ তার পর পাবেন বাংলাদেশ ও কাজাখাস্তান থেকে আসা মানুষ৷ কেন্দ্রে ক্ষমতায় থেকে এই ধরনের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার জন্য লজ্জিত হওয়া উচিত৷’’ সেই সঙ্গে তাঁর পরামর্শ, সরকার ফেলার চেয়ে কোভিড পরিস্থিতির দিকে নজর দেওয়া উচিত বিজেপি’র৷