নয়াদিল্লি:ভয়াবহ অতিমারির জেরে স্কুল-কলেজ, অফিস-কাছারি। নিতান্ত ‘এমার্জেন্সি’ ছাড়া কেউ বাড়ি থেকে দূরে কোথাও যাচ্ছেন না। বন্ধ রয়েছে ট্রেন, বাস, অটো, ট্যাক্সি পরিষেবা। অ্যাপ-নির্ভর গাড়িগুলোরও একই হাল। দু’ একটি দেশ ছন্দে ফিরতে শুরু করলেও এখনও ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ডুবে রয়েছে বাকি বিশ্ব। অদূর ভবিষ্যতে তা স্বাভাবিক হবে না বুঝতে পেরে কঠিন পদক্ষেপ নিল মার্কিন অ্যাপ-নির্ভর পরিবহণ সংস্থা উবের। এর ফলে দুনিয়া জুড়ে এই সংস্থায় কর্মরত ফের ৩০০০ মানুষ কর্মহীন হলেন। এ মাসের গোড়াতেই ৩৭০০ মানুষের চাকরি চলে গেছিল এই সংস্থা থেকে।
আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকো-স্থিত এই সংস্থাটি বিশ্বের প্রায় ৪৫টি দফতর বন্ধ করে দিতে চলেছে। অতিমারির এই পরিস্থিতিতে এখন মানুষ রাস্তায় বেরচ্ছেন না, ফলে আয় কমে গেছে বিপুল হারে। গত বছরের এপ্রিল মাসের তুলনায় এ বছরের আয় কমে গেছে ৮০ শতাংশ। আপাতত ব্যবসা বন্ধ রেখে উবের তাদের যান্ত্রিক বুদ্ধিমত্তা বাড়ানোয় জোর দিতে চলেছে। তাছাড়া এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অ্যাপটিতেও নানান বদল আনার কথা পরিকল্পনা করেছে। সোমবার সংস্থার সিইও ডারা খোসরোসাহি তাঁর কর্মীদের জানিয়েছেন, উবের আবার তাদের মূল কাজ অর্থাৎ জন পরিবহণ, খাদ্য এবং মুদিসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কাজে ফিরে যাবে।
খোসরোসাহি বলেছেন, ‘এই সিদ্ধান্ত নেওয়া খুবই কঠিন ছিল। ব্যবসা ভালই হচ্ছে, উবের ইটস দারুণ কাজ করছে, জন পরিবহণও উন্নতি করছে। আমরা ভেবেছিলাম কিছুদিন অপেক্ষা করে এই ভাইরাসকে তাড়ানো যাবে এবং ভাল সময় ফিরে আসবে, কিন্তু আপাতত তার কোনও সম্ভাবনা দেখছি না। ভেবেছিলাম পৃথিবী আবার স্বাভাবিক হবে এবং আমরা ফের আগের মতো লাভের মুখ দেখব কিন্তু তা হওয়ার নয়।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অতিমারির প্রথম তিনমাসে উবের সংস্থার ক্ষতির পরিমাণ ২.৯ বিলিয়ন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ২১,৯৪৮ কোটি টাকা)। উবেরের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থা ‘লিফ্ট’-এর হালও একই রকম। তারাও ইতিমধ্যে ৯৮২ জন কর্মী ছাঁটাই করেছে। এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভাল, উবের চালকরা কোম্পানির স্থায়ী কর্মী নন। তাঁরা স্বাধীনভাবে নয়তো চুক্তিসাপেক্ষে কাজ করেন। ফলে সংস্থার লাভ বা ক্ষতির সঙ্গে তাঁদের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ নেই। তবে পরোক্ষভাবে আছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।