মিরাট: যমজ ভাই করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে হার মানলেন একসঙ্গেই। মায়ের কোল আলো করে একসঙ্গে পৃথিবীতে এসেছিলেন দু’জন। করোনার ছোবলে একসঙ্গেই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে মৃত্যুপুরীতে পাড়ি দিলেন দু’জনে৷ মারণ ভাইরাসের দাপটে মাত্র ২৪ বছর বয়সেই দুই ছেলের প্রাণহানি মেনে নিতে পারছেন না বাবা-মা। শোকে পাথর তাঁরা৷
১৯৯৭ সালের ২৩ এপ্রিল। যজম ছেলের জন্মের মুহূর্তটা এখনও স্পষ্ট মনে পড়ে মিরাটের ক্যান্টনমেন্ট এলাকার বাসিন্দা গ্রগারি রেমন্ড রাফেলের। ওইদিন হাসপাতালের অপারেশন রুমে চলছিল অস্ত্রোপচার। সন্তানসম্ভবা স্ত্রী যখন অপারেশন টেবিলে শুয়েছিলেন, তখন বাইরে উৎকণ্ঠা নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন স্বামী রাফেল। কিছুক্ষণের মধ্যেই ভিতর থেকে সুখবর আসে। যমজ পুত্রসন্তানের বাবা হওয়ার কথা জানতে পারেন রাফেল। অবিকল একইরকম দুই পুত্রসন্তানের মুখ দেখে আনন্দে চোখে জল এসে গিয়েছিল তাঁর। শখ করে দুই ছেলের নাম রেখেছিলেন জোফ্রেড ভার্গিস গ্রগারি এবং রাফ্রেড জর্জ গ্রগারি। দুই ভাইয়ের বেড়ে ওঠার মধ্যেও কোনও তফাৎ ছিল না।
শিক্ষক বাবা-মা দু’জনকে বড় করে তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে হায়দরাবাদে দুই ভাই পড়াশোনা করতে শুরু করেন। সব ঠিকঠাকই চলছিল৷ তবে সাধল করোনা৷ গত ২৪ এপ্রিল জানা যায় যমজ ভাইয়ের শরীরে থাবা বসিয়েছে করোনা নামক মারণ ভাইরাস। বাবা-মা জানান, বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা করা হচ্ছিল তাঁদের। তবে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় দু’জনকে। সুস্থও হয়ে ওঠে দু’জনই৷ দুই ভাইয়ের কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভও আসে। কিন্তু ১৩ মে আচমকা প্রাণ হারান এক ভাই। অন্য জনকে ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ জানানো হয়নি। ভাইয়ের মৃত্যুর খবর জানার আগেই পরলোক গমন করলেন আর এক ভাইও। ঠিক কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ১৪ মে প্রাণ গেল আর ভাইয়েরও। দুই ছেলের একইসঙ্গে প্রাণহানি মানতে পারছেন না তাদের বাবা-মা। শোকে যেন পাথর হয়ে গিয়েছেন দু’জনেই।