মুম্বই: টেলিভিশন চ্যানেলের টিআরপি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে মুম্বই পুলিশ। তদন্তের যে কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের নাম উঠে এসেছে, তার উপর চলছে তদন্ত। অভিযোগ উঠেছে টিআরপিতে হেরফের করছে কয়েকটি চ্যানেল। এরপরই ব্রডকাস্ট অডিয়েন্স রিসার্চ কাউন্সিল (বিএআরসি) ভারত তত্ক্ষণিকভাবে কার্যকরভাবে রেটিং সিস্টেমটি বিরতি দেওয়ার এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিএআরসি বোর্ডের তরফে জানানো হয়েছে যে এর প্রযুক্তিগত কমিটি তাদের পরিসংখ্যানিক দৃঢ়তা উন্নত করতে এবং প্যানেল বাড়তি অনুপ্রবেশের সম্ভাব্য প্রয়াসকে ব্যর্থ করতে চায়। সেই কারণে তাদের ডেটা পরিমাপ ও প্রতিবেদনের বর্তমান মানদণ্ডগুলি পর্যালোচনা ও বর্ধিত করবে তারা। বৃহস্পতিবার সংস্থার তরফে জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, হিন্দি ভাষা, আঞ্চলিক ভাষা, ইংরেজি সংবাদ চ্যানেল এবং বিজনেস নিউজ চ্যানেলগুলি এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত। এই পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে বিএআরসি ইন্ডিয়া বোর্ডের চেয়ারম্যান পুনিত গোয়েঙ্কা বলেন, “অতি সাম্প্রতিক ঘটনাবলি দেখে বিএআরসি বোর্ড এই মতামত প্রকাশ করেছে। বলা হয়েছে যে ইন্ডাস্ট্রি এবং বিএআরসি ইতিমধ্যে কঠোর পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক্ষেত্রে নিবিড়ভাবে কাজ করতে একটি বিরতি দেওয়া দরকার ছিল। এ সম্পর্কে প্রোটোকল আরও বাড়াতে এবং শিল্পকে বৃদ্ধি করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
বিএআরসি ইন্ডিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুনীল লুলা বলেছিলেন, বিএআরসি বিশ্বস্ততার সঙ্গে আমাদের দায়িত্ব (রেটিং) পালন করে। ‘হোয়াট ইন্ডিয়া ওয়াচস’-এর দিকে নজর রাখে তারা। প্রতিবেদন করার ক্ষেত্রে তারা নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি আরও বলেন যে বর্তমান প্রোটোকলগুলিকে বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক মানদণ্ডের সঙ্গে তাঁদের মানদণ্ড তৈরি করার পাশাপাশি, বিএআরসি তাঁর প্যানেল ঘরের দর্শকদের অবৈধ প্ররোচনাকে নিরুৎসাহিত করতে এবং দর্শকদের অপব্যবহারের সমাধানের জন্য এর আচরণবিধিটিকে আরও জোরদার করার জন্য সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন বিকল্প অনুসন্ধান করছে।
প্রসঙ্গত, টিআরপি বা টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট কোনও চ্যানেল বা অনুষ্ঠানের জনপ্রিয়তা নির্ধারণ করে। কোন চ্যানেল কত মানুষ দেখছেন বা কোন অনুষ্ঠান সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে তা নির্ধারণ করে এই রেটিং। উল্লেখ্য, রিপাবলিক টিভি সহ তিনটি খবরের চ্যানেলের বিরুদ্ধে টিআরপি কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, বিভিন্ন এলাকায় দর্শকদের টাকা দিয়ে চ্যানেল চালিয়ে রাখতে বলা হত। এমনকি বাড়িতে কেউ না থাকলেও নির্দিষ্ট চ্যানেল চালিয়ে রাখার নির্দেশ দেওয়া হত। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় নাম রিপাবলিক টিভির। যদিও এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভাবে অস্বীকার করেছে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। উল্টে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা মুম্বাই পুলিশের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার হুমকি দিয়েছে তারা। সেই প্রেক্ষিতেই সিবিআই তদন্তের আর্জি জানানো হয় সুপ্রিম কোর্টে। এদিন সেই আর্জি না শুনেই বম্বে হাইকোর্টের উপর ভরসা রাখতে বলা হয়েছে রিপাবলিক টিভিকে।