নয়াদিল্লি: ফি বছর নভেম্বর শেষ হতেই বরফ পড়তে শুরু করে লাদাখ সীমান্তে৷ মাইনাস ৩০ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেললিয়াসে নেমে যায় তাপমাত্রা৷ কোনও কোনও এলাকায় ৪০ ফুট পর্যন্ত বরফ জমে যায়৷ লাদাখ সীমান্তে গত কয়েক মাস ধরে চিনের সঙ্গে সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে৷ পূর্ব লাদাখ সীমান্ত বারবার আগ্রাসী পদক্ষেপ করেছে লাল ফৌজ৷ এই অবস্থায় সীমান্ত থেকে সেনা সরানো সম্ভব নয় নয়াদিল্লির পক্ষে৷ ফলে অতি প্রবল ঠাণ্ডার মধ্যেও সীমান্তে অতন্দ্র প্রহারায় থাকবে আমাদের সেনা জওয়ানরা৷ এই ঠাণ্ডায় যাতে জওয়ানদের কোনও সমস্যা না হয়, সে কারণে তাঁদের থাকার জন্য অত্যাধুনিক বন্দোবস্ত করল কেন্দ্রীয় সরকার৷
আরও পড়ুন- লাভ জিহাদের বিরুদ্ধে কড়া আইন আনছে রাজ্য, হতে পারে পাঁচ বছরের জেল
গত কয়েক মাস ধরে চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারত ও চিন৷ প্রতি বছর শীতে সীমান্ত অঞ্চল থেকে সেনা সরিয়ে নেয় দু’ দেশই৷ তবে এবার লাদাখের পার্বত্য অঞ্চলে প্রবল ঠাণ্ডার মধ্যেও অনঢ় থাকবে ভারতীয় সেনা৷ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা সরাচ্ছে না চিনও৷ তাই লাদাখ সীমান্তে সেনাদের থাকার জন্য অত্যাধুনিক সেনা ছাউনি তৈরি করা হয়েছে৷ বুধবার সেনার তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘‘প্রবল ঠাণ্ডার মধ্যে যাতে সেনা জওয়ানদের থাকার কোনও সমস্যা না হয়, তাঁরা যাতে সব রকম সক্রিয়তা বাজায় রাখতে পারে তার জন্য ভারতীয় সেনার তরফে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে৷’’ ওই বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, ‘‘এই স্মার্ট তাবুর মধ্যে রয়েছে বিদ্যুৎ, গরম জল, হিটিং মেশিনের পর্যান্ত বন্দোবস্ত৷ হিটিং মেশিনের সাহায্যে তাবু গরম রাখা যাবে৷ সোলার পাওয়ার ও বায়ু শক্তির সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে৷ এছাড়াও ২৪ ঘণ্টাই তাবুর মধ্যে মিলবে গরম জল৷ জওয়ানদের স্বাস্থ্য ও স্বচ্ছ্বতার উপরেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে৷’’ থাকছে গাড়ি রাখার ছাউনিও৷ আগামী ছয় মাস লাদাখ সীমান্তে মোতায়েন ভারতীয় সেনার কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ৷ জুলাই মাস থেকেই সেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে৷ বিশেষ পোশাক ও তাবু কেনা হয়ে গিয়েছে৷ ফলে তাপমাত্রা মাইনাস ৪০ এ নামলেও কষ্ট হবে না সেনাদের৷
আরও পড়ুন- কত কাটায় বিক্রি হবে করোনা টিকা? শুরু আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা
পূর্ব লাদাখ সীমান্তে সেনা মোতায়েন রাখার ব্যবস্থা প্রায় সারা৷ জানা গিয়েছে প্রবল শীতের মধ্যেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার দু’পাড়ে প্রায় ৫০ হাজার সেনা মোতায়েন থাকবে৷ গত মে মাস থেকেই সীমান্তে উত্তেজনার পারদ চড়ছে৷ গত ১৫ জুন চিনের আগ্রাসী পদক্ষেপে রক্ত ঝরে গালওয়ান উপত্যকায়৷ শহিদ হন ২০ ভারতীয় জওয়ান৷ চিনেও বহু সেনার মৃত্যু হয়েছে৷ সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে একাধিক বৈঠকেও সমস্যার সমাধান হয়নি৷