চেন্নাই: কোভিড ১৯ ভাইরাসের জেরে তৈরি হয়েছে সঙ্কটজনক পরিস্থিতি। তবে তা রুখতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের তরফে নানা পদক্ষেপ করা হচ্ছে। পাশাপাশি কেউ কেউ ব্যক্তিগত উদ্যোগেও সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। এমন একাধিক নজির খোদ এই রাজ্যেও দেখা গেছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ঘটনায় সম্প্রতি তামিলনাড়ুর এক রূপান্তরকামী মহিলার নাম উঠে এসেছে। যিনি প্রতিদিন ৩০০ জনেরও বেশি মানুষকে বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ করেন। সেই তালিকায় ভিক্ষুক থেকে শুরু করে সমাজের সমস্ত শ্রেণির মানুষই রয়েছেন।
আরও পড়ুন: আটকে পড়া ২০০ মানুষকে বাড়ি ফেরালেন এই মহিলা ক্যাব চালক
কোয়েম্বাটুরের সঙ্গীতা ক্যাটারিং সার্ভিসের নাম এখন ছড়িয়ে পড়েছে বহু জায়গায়। সঙ্গীতা এমন একজন রূপান্তরকামী মহিলা, যিনি নিজেও প্রতি মুহূর্তে লড়াই করছেন। তবুও এই লকডাউনে মানুষের সাহা্য্যে এগিয়ে আসার সুযোগ পেয়েছেন, এমনটাই মনে করেন তিনি। তাই প্রকৃতই যাঁরা অভুক্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন, তাঁদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন সঙ্গীতা। তিনি বলেন, ‘এমন বহু মানুষ আছেন, বিশেষত যাঁদের মাথার ওপর ছাদটুকুও নেই, এই লকডাউন পরিস্থিতিতে দু’মুঠো খাবারের সংস্থান করাও তাঁদের কাছে কঠিন ব্যাপার। আমিও এক সময় এরকম পরিস্থিতিতে জীবন কাটিয়েছি। টাকা পয়সা ছিল না। আশ্রয় ছিল না। খাবারও ছিল না। যদি শহর-কেন্দ্রিক রূপান্তরকামী কমিউনিটির মানুষ আমার পাশে না দাঁড়াতেন, আমি হয়তো বাঁচতামই না। এই লকডাউন আমাকে সেই ঋণ পরিশোধ করার সুযোগ এনে দিয়েছে।’ নিজের জীবনের লড়াইকেই শক্তি করে ব্যক্তিগত উদ্যোগে খাবার সরবরাহের ভাবনা এসেছিল মাথায়। ক্রমেই তা আরও বৃহৎ ক্ষেত্রে কার্যকরী হচ্ছে। বিভিন্ন মানুষের কাছে গিয়ে অর্থ বা সামগ্রী সংগ্রহ করেন। তারপর নিজে হাতে রেঁধে তা বিলি করেন ৩০০ জনেরও বেশি অসহায় মানুষের মধ্যে।
আরও পড়ুন: সেঞ্চুরির ঘরে সালাহ, জোড়া গোলে ‘গোল্ডেন’ বয়, কী বললেন ক্লপ?
সঙ্গীতা বলেন, ‘আমি এবং আমার দলবল মিলে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে যতজনকে সম্ভব খাবার দিই। ভিক্ষুক থেকে শুরু করে দিনমজুর, যাঁদের যাঁদের প্রকৃতই খাবার প্রয়োজন, তাঁদের খাবার দিই। শুধু তা-ই নয়, ব্যক্তিগত খরচে শহরের ৩০টি অসহায় পরিবারের হাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য তুলে দিয়েছেন তিনি। প্রতিটি প্যাকেটে কমবেশি ১,০০০ টাকা মূল্যের সামগ্রী দিয়েছেন সঙ্গীতা। পাপাথি নামে এক মহিলাকে খাবার দেন তিনি। ভিক্ষা করেই দিন কাটে তাঁর। পাপাথি বলেন, ‘লকডাউনে আমার রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। খাবারটুকু সংগ্রহ করার সামর্থ্য ছিল না। আমাকে সাহায্য করেছেন সঙ্গীতা দিদি। যেন ঈশ্বর ওঁকে পাঠিয়েছেন।’