কলকাতা: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯। দিনটা ভারতবাসীর কাছে অত্যন্ত দুঃখের এবং মর্মান্তিক। এই অভিশপ্ত দিনেই কাশ্মীরের পুলওয়ামায় হামলা হয়। যে দিন ভালোবাসার দিন নামে পরিচিত, সেই দিকেই রক্তাক্ত করে একদল জঙ্গি। সেই হামলায় ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান শহিদ হন। তবে শুধু শোক পালন করে বসে থাকেনি ভারত। এই হামলার কড়া জবাব দেওয়া হয় ঠিক ১২ দিন পরে। পুলওয়ামা হামলার প্রতিশোধ নিয়েছিল দেশ। আজকের দিনেই অর্থাৎ ২৬ ফেব্রুয়ারি বালাকোটে এয়ার স্ট্রাইক করে ভারত। বালাকোটের জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে চলে হামলা। ভারতীয় বায়ু সেনার এটা ছিল এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। এই ঘটনা আজও মানুষের মনে দাগ কাটে।
আরও পড়ুন- আরও কমল দেশের কোভিড গ্রাফ, মৃত্যু নিয়েও চিন্তা হ্রাস
ঠিক কী ঘটেছিল সেদিন?
কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে আড়াই হাজার সিআরপিএফ কর্মী নিয়ে জম্মু থেকে শ্রীনগরের উদ্দেশে যাচ্ছিলএকটি সেনা কনভয়। ঠিক সেই সময়ই আইইডি বোঝাই একটি গাড়ি ঢুকে পড়ে কনভয়ের মধ্যে। বিরাট বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় জওয়ানদের দেহ। গাড়ি ছিটকে পড়ে পাশে। প্রাথমিকভাবে কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার না করলেও পরে তার দায় মেনে নেয় জইশ-ই-মহম্মদ। ২২ বছর বয়সী আত্মঘাতী জঙ্গি আদিল আহমের দার এই ঘটনা ঘটায়। সেই সময় তার একটি ভিডিও-ও ভাইরাল হয়েছিল। এই পুলওয়ামা হামলা উপত্যকার ৩০ বছরের ইতিহাসে সব থেকে বড় হামলা ছিল বলে মনে করা হয়। এই ঘটনার পরেই জানা যায় যে, এই হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। তাই ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক আরও তলানিতে চলে গিয়েছিল। একই সঙ্গে প্রতিশোধ নেওয়ার খিদে বাড়ছিল ভারতের সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে আম আদমির মধ্যে।
এয়ার স্ট্রাইক
কথায় আছে, ‘দের অ্যায়, দুরুস্থ অ্যায়’। ঠিক এটাই হয়েছিল এক্ষেত্রে। তৎক্ষণাৎ ভারতের তরফে কোনও রকম পদক্ষেপ নেওয়া না হলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারত পাকিস্তানকে হাতে না মেরে ভাতে মারারও। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, হামলার ঘটনার ঠিক ১২ দিন পর, ২৬ ফেব্রুয়ারি বালাকোটে এয়ার স্ট্রাইক করে ভারতীয় বায়ুসেনা। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে সীমান্ত লাগোয়া জইস-ই-মহম্মদের ঘাঁটি উড়িয়ে দিয়েছিল ভারত। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জঙ্গি ঘাঁটির এলাকা তছনছ করে দিয়েছিল ভারতীয় বাহিনী। এর আগে উরি হামলার পর সারজিক্যাল স্ট্রাইক করেছিল ভারত। তারপরেও নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসেনি পাকিস্তান। তবে পুলওয়ামা এয়ার স্ট্রাইক তাদের কাছেও বিরাট বড় ধাক্কা হিসেবেই প্রমাণিত হয়েছে।