পাটনা: আনন্দ কুমার হলেন সেই কষ্ঠি পাথর যাঁর ছোঁয়ায় অনির্বাণ হয়ে ওঠে শত শত শিক্ষার্থী৷ তিনি হলেন সেই শিক্ষক, যিনি তাঁর শিষ্যদের হাতে তুলে দেন সম্মান নিয়ে বাঁচার চাবিকাঠি। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে ভবিষ্যত প্রণেতাদের কী বার্তা দিলেন সুপার-৩০ এর জন্মদাতা?
এক ভিডিও বার্তায় আনন্দ কুমার বলেন, আজকের যুব সমাজই ভবিষ্যতের বুনিয়াদ৷ যুবসমাজের উপর দেশবাসীর এই বিপুল আকাঙ্খা পূরণে প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে তাঁদের৷ এই সংকটের মুহূর্ত একদিন কেটে যাবে৷ কিন্তু এই সময়ে কী ভাবে নিজেদের তৈরি করবেন ছাত্রছাত্রীরা? সেই মন্ত্র দিলেন ‘সুপার-৩০’র প্রতিষ্ঠাতা ও বিখ্যাত গণিতজ্ঞ আনন্দ কুমার৷ মতামত দিলেন জেইই মেন বা অ্যাডভান্স পরীক্ষা নিয়েও৷
আনন্দ কুমার বলেন, ‘‘যখনই আমি কোনও সেমিনারে যাই, ছাত্রছাত্রী এবং তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে কথা বলি, তারা একটাই কথা বলে, স্যার আমরা কী করব? আমাদের হাতে সময়ই নেই৷ সারাদিন স্কুল বা কলেজে কেটে যায়৷ সন্ধ্যায় টিউশন বা কোচিং ক্লাস থাকে৷ সেলফ স্টাডির জন্য হাতে সময় থাকে না৷’’ আনন্দ বললেন, এবার প্রকৃতি তোমাদের সেই সুযোগ দিয়েছে৷ একটা অংক কতগুলি পদ্ধতিতে সমাধান করা যেতে পারে বা নির্দিষ্ট কোনও অংকের কাছাকাছি অন্য একটা নতুন অংক কী ভাবে বন্ধুদের জন্য তৈরি করবে, সেই সকল বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করার এটাই সঠিক সময়৷
জেইই মেন এবং জেইই অ্যাডভান্স পরীক্ষা নিয়েও চিন্তায় রয়েছে ছাত্রছাত্রীরা৷ তাঁদের উদ্দেশ্যে আনন্দ কুমার বলেন, ‘‘পরিস্থিতি ফের স্বাভাবিক হবে৷ অনলাইন হোক বা অফলাইন, যেমন সম্ভব হবে, সে ভাবেই পরীক্ষাও নেওয়া হবে৷ এই সময়ের মধ্যে নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে৷ মনে করতে হবে যেন আগামী সপ্তাহেই পরীক্ষা৷ পড়াগুলো বারবার ঝালিয়ে নিতে হবে৷ অনেক সময় প্রস্তুতি নিলেও সময়ের অভাবে রিভিশন করা সম্ভব হয় না৷ কিন্তু বারবার রিভিশন করতে হবে৷ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো খাতায় লিখে রাখতে হবে৷ নিজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই একটা নোট তৈরি করতে হবে এবং বারবার সেগুলি পড়ে যেতে হবে৷’’
কেউ কেউ বলছেন জেইই মেনের উপর ভিত্তি করেই হয়তো জেইই অ্যাডভান্সে ছাত্রছাত্রীদের নির্বাচন করা হবে৷ কিন্তু আনন্দ কুমার মনে করেন, দুটো পরীক্ষাই হওয়া উচিত৷ জেইই মেনের মাধ্যমে কলেজ এবং আইআইটিগুলির জন্য বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রীকে নির্বাচন করা হয়৷ কিন্তু আইআইটিগুলির নিজস্ব মর্যাদা আছে৷ মান আছে৷ তিনি চাই ভালো ছাত্রছাত্রীরা যাতে আইআইটি-তে পৌঁছতে পারে৷ সময় লাগলেও দুটি পরীক্ষা পৃথক ভাবে নেওয়া উচিত বলেই মনে করেন তিনি৷
অন্যদিকে আনন্দ কুমার বলেন, প্লেসমেন্ট এবং ইন্টার্নশিপের জন্য হয়তো ছয় মাস কিংবা এক বছরও অপেক্ষা করতে হতে পারে৷ কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী, যতই খারাপ সময় আসুক না কেন, তা অতিক্রান্ত হওয়ার পর ভালো সময় আসবেই৷ এই ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার জন্য ভালো ইঞ্জিনিয়র বা অফিসারের প্রয়োজন হবেই৷