কলকাতা: ক্ষোভটা ছিলই৷ এবার দাবানলের মতো বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ল রাজধানীতেও৷ কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের পর এবার দেশের শীর্ষ আদালতে দায়ের চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলা৷
সরকারি ডাক্তারদের সুরক্ষার দাবিতে আজ দেশের শীর্ষ আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের৷ এবার জনস্বার্থ মামলা দায়ের সুপ্রিম কোর্টে৷ নিরাপত্তা রূপরেক্ষা তৈরিতে কড়াকড়ির আর্জি৷ প্রত্যেক হাসপাতালে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি৷ চিকিৎসকদের নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে ওই মামলায়৷ খুব দ্রুত ওই মামলার শুনানি হবে বলে খবর৷ অন্যদিকে, এনআরএস-কাণ্ডের প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই ১৭ জুন সোমবার দেশ জুড়ে ধর্মঘট ডাক দিয়েছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন বা আইএমএ৷
অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, রাজ্যপালের আর্জির পর আজও স্বাভাবিক হল না স্বাস্থ্য পরিষেবা৷ কর্মবিরতিতে অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা৷ আজ সকাল থেকে এসএসকেএম হাসপাতালের জরুরি বিভাগ চালু হলেও বন্ধ আউটডোর৷ পরিষেবা বন্ধ থাকায় চূড়ান্ত সমস্যায় পড়েছেন রোগীরা৷ এই পরিস্থিতিতে সরকারি হাসপাতালে রোগী ভোগান্তির বিহীত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের জনস্বার্থ মামলা৷ চিকিৎসকদের কর্মবিরতি আইনবিরুদ্ধ বলেও মামলায় উল্লেখ করেছেন চিকিৎসক কুণাল সাহা৷
ডাক্তারদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হওয়া মামলার শুনানিতেও কার্যত আজ ধাক্কা খেতে হয় রাজ্যকে৷ আদালত সূত্রে খবর, রোগী ভোগান্তি সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন সাফ জানিয়ে দিয়েছে, সমস্যা সমাধান রাজ্য সরকারকেই করতে হবে৷ পরিস্থিতি যে দিকে এগিয়ে গিয়েছে, তা রুখতে কী ব্যবস্থা নিয়েছে রাজ্য সরকার? তা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট৷ কিন্তু, চিকিৎসকদের কর্মবিরতি তুলতে মামলা দায়ের হলেও তার ফয়সলা এখনও হয়নি৷
অন্যদিকে রাজ্যের উপর চাপ বাড়িয়ে এবার গণ-ইস্তফা বাংলার চিকিৎসকদের৷ জানা গিয়েছে, আজ আর জি কর হাসপাতালে নতুন করে ৮০ চিকিৎসক গণ-ইস্তফাপত্রে স্বাক্ষর করেছেন দিয়েছে৷ বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁরা পরিষেবা দেব না বলে জানিয়েছেন৷ বিভাগীয় প্রধানের কাছে জমা পড়েছে ইস্তফা৷
এনআরএস কাণ্ডের প্রতিবাদে ডাক্তারদের গণইস্তফার পর্ব আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে৷ এনআরএস হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিনটেন্ডেন্ট ও ভাইস প্রিন্সিপাল সৌরভ চট্টোপাধ্যয় ও প্রিন্সিপাল শৈবাল মুখোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার রাতেই পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন স্বাস্থ্যভবনে৷ পদত্যাগপত্রে তাঁরা জানিয়েছে, সরকারের দেওয়া দায়িত্ব পালন করতে তাঁরা ব্যর্থ৷ তাই এই সিদ্ধান্ত৷
শোনা যাচ্ছে, আজ এনআরএস হাসপাতাল থেকে আরও ১৬ জন সিনিয়র চিকিৎসক ইস্তফা দিতে চলেছেন৷ তবে তা এখনও চূড়ান্ত কিছু জানানো হয়নি৷ গণ ইস্তফার পথে হাঁটতে পারেন আলিপুরদুয়ারের জেলা হাসাপাতালের চিকিৎসকরাও৷ সিউড়ি হাসপাতালে ৪৬ জন চিকিৎসক ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন৷ সাগর দত্ত হাসপাতালেও ২০ জন ডাক্তারের গণইস্তফা দিয়েছেন৷ উত্তরবঙ্গে মেডিক্যাল কলেজে অধ্যক্ষ সহ পাঁচ চিকিৎসক ইস্তফা দিয়েছেন৷ এই নিয়ে বাংলাজুড়ে ১৬৭ জন চিকিৎসক গণ-ইস্তফা দিয়েছেন বলে খবর৷