বদলেছে সমীকরণ, গত তিনবারের চেয়ে এবার অনেকটাই আলাদা বিহারের ভোট

বদলেছে সমীকরণ, গত তিনবারের চেয়ে এবার অনেকটাই আলাদা বিহারের ভোট

পাটনা: আগামী ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে বিহারের বিধান ভোট৷ কিন্তু গত তিন বছরের সঙ্গে এ বছরের ভোট সমীকরণে রয়েছে বিস্তর ফারাক৷ এর আগে ২০০৫ সালে লালু প্রসাদ যাদবের বিরুদ্ধে কোমর বেঁধেছিল বিরোধীরা৷ ২০১০-এ ছিল ‘সুশাসন’-প্রতিষ্ঠান দাবি৷ ২০১৫-তে উঠেছিল বিজেপি বিরোধী ঝড়৷ তবে এর তিনটির একটিও নেই ২০২০-র ভোটে৷ 

আরও পড়ুন- সিএএ বিরোধীতার লক্ষ্য ছিল মুসলিম ভাইদের বিভ্রান্ত করা: মোহন ভাগবত

জঙ্গলরাজের প্রত্যাবর্তন, করোনাকালে আর্থিক সংকট এবং ব্যাপক বেকারত্বের মতো – একাধিক ইস্যু বিহার ভোটে বড় ভূমিকা নিতে চলেছে৷ এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে বিহারের মানুষ৷ ফরিদাবাদ গ্রামে মাত্র চার বছর পুরনো সন-ক্যানাল রোডের উপর একটি পানের দোকান রয়েছে প্রেম কুমারের৷ যা কিনা পাটনা থেকে সোজা চলে গিয়েছে আরওয়াল এবং ঝাড়খণ্ডের দিকে৷ ভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘নীতীশ কুমার এই রাস্তাটা তৈরি করে দিয়েছেন৷ আমি এই রাস্তার পাশে বসেই উপার্জন করি৷ কিন্তু এর জন্য কী আমাকে চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকতে হবে?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজ্যের জন্য স্পেশাল স্টেটাসের যে দাবি ছিল তাঁর, সেটার কী হল? কেন্দ্র থেকে আরও বেশি টাকা আসা উচিত ছিল রাজ্যে৷’’ তাই পরিস্থিতির বিচার করে এবার কংগ্রেসকেই ভোট দেবেন কুমার৷ তিনি আরও বলেন, ‘‘সম্প্রতি এই রাস্তা সংলগ্ন সরকারি জমিতে গাছ লাগাতে শুরু করেছে নীতীশ সরকার৷ আগে এই জমিই কৃষকদের লিজে দেওয়া হত৷ কিন্তু সরকারের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফুঁসছে কৃষকরা৷ কেন ভোটের আগে উনি এ সব করছেন, তা ঈশ্বরই জানেন৷’’ হতাশার সুর কুমারের গলায়৷ তিনি যে মুখ্যমমন্ত্রী নীতীশ কুমারের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন৷ তবে কোনও দল দেখে নয়, তিনি ভোট দিতে চান প্রার্থীকে দেখেই৷  

একই গ্রামের ভূমিহার কৃষক কুশল কুমার শর্মা আবার কুমারের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন না৷ তিনি বলেন, ‘জঙ্গলরাজ’ চলার সময় সন্ধ্যার পর কেউ এই পথে আসত না৷ তাঁর কথায়, ‘‘এক সময় আমরা যে কঠিন লড়াই করেছি, তা আজকের প্রজন্ম বুঝবে না৷ যখন এ রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা বলতে কিছুই ছিল না৷’’ তবে জেতা আসনে কংগ্রেস একা প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার জন্যও বেশ অসন্তুষ্ট তিনি৷ কিন্তু এই বার কংগ্রেসও যে একেবারে কিনারায় পৌঁছে গিয়েছে, সে কথাও স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি৷ ‘‘প্রথম দফায় বিকাশ পুরুষ হিসাবেই ক্ষমতায় এসেছিলেন নীতীশ কুমার, কিন্তু এর পর ১৫ বছর কেটে গিয়েছে৷ এবার পরিবর্তন চাই’’, বললেন পাশের বৈগওয়ান গ্রামের বাসিন্দা জলেশ্বর পাসোয়ান৷ তিনি যে এবার পরিবর্তনের পক্ষেই ভোট দেবেন, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন৷ 

আরও পড়ুন- বিনামূল্যে করোনা প্রতিষেধক পাবে প্রত্যেক দেশবাসী, ঘোষণা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর

নীতীশ কুমারের বিকাশ পুরুষের ভাবমূর্তিতে অনেকটাই মরচে পড়েছে৷ প্রত্যাবর্তনের চেয়ে পরিবর্তনের দিকেই ঝুঁকছে বিহারের মানুষ৷ এবিপি-সি ভোটারের সমীক্ষাতে দেখা গিয়েছে, রাজ্যের মাত্র ২৯.৫ শতাংশ মানুষ চাইছে ফের কুর্সিতে ফিরুক নীতীশ সরকার৷ তবে সমীক্ষা বলছে, ৪৩ শতাংশ ভোট পেয়ে ক্ষমতা দখল করতে পারে বিজেপি-জেডিইউ জোট৷ আবার কংগ্রেস ও আরজেডি জোট পেতে পারে ৩৫ শতাংশ ভোট৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen − eight =