অভূতপূর্ব প্রতিবাদ: ২২ বছর ধরে স্নান করেননি বিহারের এই ব্যক্তি

অভূতপূর্ব প্রতিবাদ: ২২ বছর ধরে স্নান করেননি বিহারের এই ব্যক্তি

পাটনা: এ যেন কলিযুগের ভীষ্ম।  নিজের দেশ তথা রাজ্যের জন্য পিতামহ ভীষ্ম যেমন চিরকুমার থাকার প্রতিজ্ঞা পালন করেছিলেন জীবনভর, ঠিক তেমনই পাটনার ধর্মদেব রামও একই রকমভাবে দেশ তথা দেশের মহিলা এবং নিরীহ পশুদের সুরক্ষার্থে বছরভর ধরে পালন করছেন এক অভূতপূর্ব প্রতিজ্ঞা। জানা যাচ্ছে বিহারের গোপালগঞ্জ জেলার বৈকন্ঠপুর গ্রামের বাসিন্দা ধর্মদেব দীর্ঘ ২২ বছর ধরে শরীরে এক ফোঁটাও জলও ছোঁয়াননি। তাঁর দাবি, দেশে যতদিন পর্যন্ত মহিলাদের উপর অত্যাচার চলবে, নিরীহ পশুদের হত্যা করা হবে এবং জমি নিয়ে বিবাদ বন্ধ না হবে ততদিন পর্যন্ত তিনি তাঁর এই প্রতিজ্ঞায় অটল থাকবেন। ৪০ বছর বয়সী ধর্মদেবের পরিবার বলতে আর কেউই বাকি নেই। একে একে তাঁর স্ত্রী এবং পুত্রেরা সকলেই পাড়ি দিয়েছে না ফেরার দেশে। কিন্তু স্ত্রী-পুত্র শোকও ধর্মদেবকে তাঁর প্রতিজ্ঞা থেকে একচুলও টলাতে পারেনি। ২২ বছর ধরে স্নান না করেই দিন কাটাচ্ছেন তিনি।

স্থানীয় সূত্রে খবর, বিয়ের আগে ধর্মদেব পশ্চিমবাংলারই বাসিন্দা ছিলেন। উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দলে একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি। এরপর ১৯৭৮ সালে বিয়ের পর তিনি বিহারে ফিরে যান। ১০ বছর স্ত্রীর সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই সংসার করেছেন। কিন্তু হঠাৎই ১৯৮৭ সালে ধর্মদেব পন করে বসেন যতদিন পর্যন্ত মহিলাদের উপর হিংসার ঘটনা এবং নিরীহ পশুদের হত্যা বন্ধ হবে ততদিন পর্যন্ত তিনি ত্যাগের পথেই হাঁটবেন। ওই বছরই তিনি একজন সন্ন্যাসী শরণাপন্ন হন এবং তার শিষ্য হয়ে ওঠেন। সেই থেকেই শুরু তাঁর সন্ন্যাসী জীবন। সম্প্রতি ধর্মদেব এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন,স্নান না করার পাশাপাশি দীর্ঘ ২২ বছর ধরে তিনি ভগবান রামচন্দ্রের ধ্যান করে চলেছেন।

 এইভাবে চলতে চলতে ২০০৩ সালে হঠাৎই তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়। কিন্তু তখনও নিজের পণেই অটল ছিলেন ধর্মদেব। এরপর তাঁর বড়ছেলের মৃত্যু হয়, সেই সময়ও ওই ব্যক্তি এক ফোঁটাও জলস্পর্শ করেননি। শেষ সন্তানের মৃত্যু হয়েছে চলতি বছরে ৭ই জুলাই। তখনও তিনি নিজের প্রতিজ্ঞায় অনড় ছিলেন বলে খবর। প্রতিবেশীদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে সঠিক আহার এবং স্নান না করলেও এখনো পর্যন্ত শারীরিক কোন সমস্যা নেই ধর্মদেবের। পরিবারের কেউ না থাকার কারণে একাই কোনমতে দিনগুজরান হয় তার। তবে স্নান তিনি আজও করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *