নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী মোদির পাশে দাঁড়িয়ে পাল্টা চিঠি পাঠালেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৬১ জন বুদ্ধিজীবী৷ চিঠিতে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বিতারণ, পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনের হিংসার কথা থাকতে চলেছে৷
চিঠিতে সই চলেছেন অনুপম খের, বিবেক ওবেরয়, বিবেক অগ্নিহত্রী৷ এছাড়াও বলিউডের বেশ কয়েকজন অভিনেতা অভিনেত্রী এই চিঠিতে স্বাক্ষর করতে রাজি হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে৷ মোদিকে পাঠানো বুদ্ধিজীবীদের প্রতিবাদী চিঠিতে যেমন পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্টদের প্রাধানন্য রয়েছে, তার পাল্টা হিসেবে বিজেপিপন্থী বুদ্ধিজীবীদের পাঠানো চিঠিতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে স্বাক্ষরের আধিক্য রয়েছে৷ চিঠিতে সই রয়েছে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া টলিউডের অভিনেতা পার্নো মিত্র, কাঞ্চনা মৈত্র৷
61 personalities including actor Kangana Ranaut, lyricist Prasoon Joshi, Classical Dancer and MP Sonal Mansingh,Instrumentalist Pandit Vishwa Mohan Bhatt, Filmmakers Madhur Bhandarkar& Vivek Agnihotri write an open letter against ‘selective outrage and false narratives’. pic.twitter.com/RGYIxXeJzS
— ANI (@ANI) July 26, 2019
The 61 personalities who have written an open letter against ‘selective outrage and false narratives’. pic.twitter.com/Fdeac3KCri
— ANI (@ANI) July 26, 2019
চিঠিতে উল্লেখ করা হচ্ছে , ‘‘২৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রীকে ৪৯ জন বিশিষ্টদের পাঠানো চিঠি দেখে তাঁরা বিস্মিত৷ বিশেষ কিছু বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সরব হওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে৷ ওই চিঠি পাঠিয়ে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন৷ কয়েকটি ঘটনায় মিথ্যা ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে৷ মাওবাদী হামলার সময় কোথায় ছিলেন এঁরা? যখন কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা স্কুল জ্বালিয়ে দিয়েছিল, তখনও ওঁরা নীরব ছিলেন। বিরোধী মতপ্রকাশের নামে ঐক্য নষ্টের চেষ্টা হচ্ছে৷ আমাদের কাছে দেশের ঐক্য, সংহতি পবিত্র বিষয়। যাঁরা এসবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবেন, তাঁদের রোখা হবে৷’’
বুধবার দেশের গণতন্ত্র বাঁচানোর দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখা বুদ্ধিজীবীদের দেশদ্রোহীর তকমা দেন দিলীপ ঘোষ৷ দেশের প্রথম শ্রেণির ৫২ জন বুদ্ধিজীবী প্রধানমন্ত্রীকে খোলা চিঠি লিখে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবাদ জানান৷ দেশে ধর্মের নামে অসুহিষ্ণতা চলছে বলে নরেন্দ্র মোদির কাছে অভিযোগ করেন নাগরিক সমাজের একাংশ৷ তারা এই অবস্থার পরিবর্তন চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে খোলা চিঠি দেন৷ এই চিঠি প্রসঙ্গে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ৷
বলেন, ‘‘ওঁরা দেশদ্রোহি। বর্তমান সময়ে চিঠি লেখা নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা পরজীবী হয়ে বেঁচে আছেন। ওঁদের ব্যাবসা বন্ধের মুখে। এখন আর এই পরজীবীদের কথা কেউ শুনছেন না৷’’ এমনকী, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখা নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের আক্রমণ করে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ আরও বলেন, ‘‘আমি এরপর ওঁদের বিরুদ্ধে সেমিনার করবো। আমার লোকসভা ছাড়াও রাজ্যের সব জায়গায় এই সেমিনার করবো। নির্বাচনের পর থেকে রাজ্যে বিজেপি কর্মীরা প্রাণ হারিয়েছেন। তারমধ্যে দলিত, আদিবাসী সব সম্প্রদায়ের মানুষ আছেন। তখন এইসব পরজীবীরা রাজ্যে প্রতিবাদ করেন না। তখন কিছু দেখতে পান না। অথচ বিহাড়, ঝাড়খন্ডে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেই রাজ্যের কতিপয় নাগরিক সমাজ প্রতিবাদ করেন।’’ রাজ্যের কতিপয় নাগরিক সমাজের মুখোশ এবার খুলে দেওয়ার সময় হয়ে এসেছে বলে বুধবার দিল্লিতে জানান বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীকে খোলা চিঠি দেশের বুদ্ধিজীবীদের৷ দেশের মোট ৫২জন বুদ্ধিজীবী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে খোলা চিঠি দিয়েছেন৷ তারমধ্যে রাজ্যের প্রায় ২০ জন বুদ্ধিজিবী এই খোলা চিঠিতে সাক্ষর করেন৷ অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, চিত্রপরিচালক গৌতম ঘোষ, অভিনেত্রী ও পরিচালক অপর্ণা সেন, অভিনেতা কৌশিক সেন সহ প্রমুখ। এছাড়াও খোলা চিঠিতে সাক্ষর করেছেন চিত্র পরিচালক শ্যাম বেনেগাল, গায়িকা শুভা মুদগাল, পরিচালক অদূর গোপালকৃষ্ণান সহ দেশের একাধিক বুদ্ধিজীবী প্রধানমন্ত্রীকে খোলা চিঠিতে সাক্ষর করেছেন৷
একাধিক সামাজিক বিষয়ের কথা উল্লেখ করে এই চিঠি দিয়েছেন নাগরিক সমাজের একাংশ। দেশে গণপিটুনি বাড়ছে৷ রামের নামে দেশজুড়ে অস্থিরতা তৈরি করা হয়েছে৷ তার সমাধানের জন্য দেশের বুদ্ধিজীবীরা প্রধানমন্ত্রীর কাজে আর্জি জানিয়েছেন৷
চলতি মাসে বিহার-সহ দেশের কয়েকটি রাজ্যে গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে৷ গোরু নিয়ে ক্রমশ দেশজুড়ে বাড়ছে অসুহিষ্ণতা৷ তা সমাধাণের জন্যই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা৷