লক্ষ টাকার চাকরি ছেড়ে, অ্যাপ বানিয়ে এই জুটির এক বছরে লাভ ২০ লক্ষ!

শুধু মুদি দোকান নয়, উৎপাদনকারী (ম্যানুফ্যাকচারার), হোলসেলার, রিটেইলার থেকে শুরু করে রেস্তোরাঁ, বেকারি, সবাই এই অ্যাপ থেকে উপকৃত হতে পারে। এই মুহূর্তে দেশের ৩০০০টি ছোট বড় শহরে রোজ প্রায় দু’ কোটি টাকার লেনদেন হয় এই অ্যাপের মাধ্যমেই। তাই এই গল্প প্রেমের নয়, আসলে সাফল্যের।

হায়দরাবাদ: রায়পুরের সোনাক্ষী এবং কার্নালের আশুতোষের প্রথম দেখা আইআইটিতে সহপাঠী হিসেবে। খুব তাড়াতাড়িই দুজনে কাছের বন্ধু হয়ে ওঠেন। যদি ভাবেন এরপরে প্রেম বা বিয়ের দিকে এগোচ্ছে গল্প তা হলে ভুল করবেন। এই গল্প বা সত্যি ঘটনা প্রেমের নয় সাফল্যের। কীভাবে লক্ষ লক্ষ টাকার চাকরি ছেড়ে নিজেরাই কর্মসংস্থানের জন্ম দিয়েছে এই জুটি, এই কাহিনি তারই। 

আইআইটির পড়া শেষ করে হায়দরাবাদে মাইক্রোসফট সংস্থায় চাকরি নেন সোনাক্ষী। ওদিকে ওদিকে চাকরিসূত্রে কানাডায় চলে যান আশুতোষ। এমনিতে জীবন ভালই কাটছিল, কিন্তু এত সহজ সরল জীবন পোষাচ্ছিল না কারওরই। চাকরিতে চ্যালেঞ্জিং কিছু ছিল না, বরং একেবারেই জলভাত। এরপর দুজনেই সিদ্ধান্ত নেন কাজ ছেড়ে দিয়ে নতুন কিছু উদ্ভাবন করার। মাত্র এক বছরের মধ্যে একটি অ্যাপ নির্মাণ করে ২০ লক্ষ টাকা মূলধন জোগাড় করে ফেলেছেন এই তরুণ-তরুণী। 

ঘটনার শুরু সোনাক্ষীর বাড়ি রায়পুরে। সোনাক্ষীর পরিবার ব্যবসায়ী, রিয়েল এস্টেট ব্যবসা ছাড়াও একটি বড় মুদির দোকান চলে তাদের। তিনি খেয়াল করেন, অনেক ক্রেতাই হোয়াটসঅ্যাপে জিনিসপত্রের অর্ডার দিচ্ছেন। কিন্তু সেই মালপত্র হোয়াটসঅ্যাপে পাওয়া তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া, তার দামের হিসেব, এসব কাজে বিস্তর সময় লেগে যাচ্ছে। এ বিষয়ে কিছু করা দরকার, এমন ভেবেই আশুতোষকে সমস্ত কথা জানান সোনাক্ষী। এবারে দুজনে মিলে একটি নতুন অ্যাপ তৈরির সিদ্ধান্ত নেন, যা ওই প্রক্রিয়াকে সহজ করে দেবে। এক্ষেত্রে তাদের সামনে ‘শপিফাই’ নামক একটি অ্যাপের দৃষ্টান্ত ছিলই। সোনাক্ষী এবং আশুতোষ সম্পূর্ণ দেশি নাম দিয়ে তৈরি করলেন ‘বিকায়ি’ অ্যাপ। 

২০১৯ সালের ১ এপ্রিল দুজনে মিলে সরকারি ভাবে এই অ্যাপ উদ্বোধন করলেন। আশুতোষ জানিয়েছেন, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে কেনাবেচা করা মানুষই তাদের প্রাথমিক কাস্টমার। এই অ্যাপ সমস্ত ছোট ব্যবসাকে তাঁদের নিজস্ব অনলাইন স্টোর এবং আরও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা এনে দিচ্ছে। শুধু মুদি দোকান নয়, উৎপাদনকারী (ম্যানুফ্যাকচারার), হোলসেলার, রিটেইলার থেকে শুরু করে রেস্তোরাঁ, বেকারি, সবাই এই অ্যাপ থেকে উপকৃত হতে পারে। এই মুহূর্তে দেশের ৩০০০টি ছোট বড় শহরে রোজ প্রায় দু’ কোটি টাকার লেনদেন হয় এই অ্যাপের মাধ্যমেই। তাই এই গল্প প্রেমের নয়, আসলে সাফল্যের।         
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 + 13 =