রাজ্যের রাজস্ব ঘাটতি মেটাতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর দুই দাওয়াই

অর্থমন্ত্রী জানান, ২০২০ অর্থবর্ষে রাজ্যগুলিকে পণ্য ও পরিষেবা খাতে ক্ষতিপূর্ণ বাবদ ১.৬৫ লক্ষ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মার্চে দেওয়া ১৩,৮০৬ কোটি টাকা, যেখানে পণ্য  ও পরিষেবা করের ক্ষতিপূরণে প্রদেয় সেস-এর পরিমাণ ৯৫,৪৪৪ কোটি টাকা।

 নয়াদিল্লি: অতিমারির জেরে ধাক্কা খেয়েছে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি। ভারত তাঁর ব্যতিক্রম তো নয়ই, উলটে নোটবন্দির ফলে তুলনামূলক ভাবে বাড়তি চাপে এদেশের আর্থিক অবস্থা। লকডাউনের প্রভাবে মার খেয়েছে ব্যবসা, ফলত ব্যাপক হারে কমেছে ফলে পণ্য ও পরিষেবা কর আদায়। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এদিন জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে জানালেন ২০২১ অর্থবর্ষে সেটির পরিমাণ ২.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা। সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর উক্তি, ‘এই বছরে আমরা এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতির মুখে পড়েছি।’ তাঁর কথায় এই অতিমারী ঈশ্বরের মার। এর প্রভাবেই অপ্রত্যাশিতভাবে জিএসটি আদায় মার খেয়েছে বলেও জানান নির্মলা।

অর্থমন্ত্রী জানান, ২০২০ অর্থবর্ষে রাজ্যগুলিকে পণ্য ও পরিষেবা খাতে ক্ষতিপূর্ণ বাবদ ১.৬৫ লক্ষ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মার্চে দেওয়া ১৩,৮০৬ কোটি টাকা, যেখানে পণ্য  ও পরিষেবা করের ক্ষতিপূরণের পরিমাণ ৯৫,৪৪৪ কোটি টাকা। অতিমারি এবং লকডাউনের জন্য রাজস্ব আদায় কমায় ভাঁড়ারে টান পড়েছে রাজ্যগুলির, একথা কেন্দ্রকে আগেই জানিয়েছিল একাধিক রাজ্য। এরই মধ্যে অবিজেপি শাসিত রাজ্য, যেমন ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি তুলে ধরেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। জিএসটি ক্ষতিপূরণের টাকা না দেওয়ার অভিযোগ তুলে এটিকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিশ্বাসঘাতকতা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এদিন অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্যগুলিকে দুটি রাস্তা দেওয়া হচ্ছে। আমরা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ব্যবস্থা করতে পারি। আজ থেকে সাতদিনের মধ্যে রাজ্যগুলির তরফে দুটি বিকল্পের বিস্তারিত দিতে হবে। অর্থাৎ আমরা ছোট একটা বৈঠক করতে পারি। আমরা একটা সিদ্ধান্ত নেব। এবছর দ্বিমাসিক পেমেন্টে দেরি হয়েছে। শুধু এবছরের জন্য আমরা এটা চাই। আবার পরের বছর এপ্রিলে পেমেন্ট নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে পারে জিএসটি কাউন্সিল।’

২০১৭ সালের ১ জুলাই কার্যকর হয়েছে পণ্য ও পরিষেবা কর। আইন অনুসারে, সেই সময় থেকে এই অভিন্ন করবিধি চালু হওয়ায় রাজ্যগুলির রাজস্বে যে ক্ষতি হয়েছে, সেই অর্থ আগামী পূরণ বছরের জন্য দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। অর্থাৎ যদি ২০১৭ এর জুলাই থেকে রাজ্যগুলির ১৪ শতাংশের নীচে বার্ষিক বৃদ্ধির হার হয় তবে ২০২২ পর্যন্ত তাদের রাজস্ব ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। আরও জানা গেছে, অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে বেণুগোপাল বলেছেন, পণ্য ও পরিষেবার ক্ষেত্রে রাজ্যগুলিকে রাজস্ব ক্ষতিপূরণের অর্থ দিতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে।
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine − 1 =