পুণে: বিয়ের পরে কুমারীত্ব পরীক্ষায় ‘ফেল’ করে বিবাহ-বিচ্ছেদের মুখে দুই নববধূ। মহারাষ্ট্রের কোলহাপুরের ঘটনা। প্রাচীন প্রথা অনুযায়ী বিয়ের পর দুই বোনকে কুমারিত্বের পরীক্ষা দিতে হয়েছিল। কিন্তু তারা সেই পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে গ্রামের ‘জাত পঞ্চায়েত’ তাদের বিরুদ্ধে বিবাহ বিচ্ছেদের রায় দেয়। দুই তরুনীর মা এই ঘটনা নিয়ে পুলিশের শরণাপন্ন হলে দুজনের স্বামী, শাশুড়ি ও পঞ্চায়েতের কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
কোলহাপুর গ্রামের দুই যুবকের সঙ্গে দুই বোনের বিয়ে হয় চলতি বছরের শুরুতে। বিয়ের পরে ওই গ্রামের কঞ্জরভাট সম্প্রদায়ের প্রাচীন প্রথা অনুযায়ী দুই বোনকে কুমারীত্বের পরীক্ষা দিতে হয়। কিন্তু সেই পরীক্ষায় দুই বোনের মধ্যে একজন ‘ফেল’ করে। স্বামীর সঙ্গে প্রথম সঙ্গমে সাদা চাদরে রক্তের দাগ না পাওয়ায় তাকে ওই পরীক্ষায় অকৃতকার্যের সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। তারপরই বিয়ের আগে অন্য পুরুষের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল বলে ওই তরুণীর ওপর শ্বশুর বাড়ির চাপ বেড়ে যায়। তাকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। উল্লেখ্য, দুই বোনের স্বামীদের একজন ভারতীয় সেনায় চাকরি করেন।
অত্যাচারের পাশাপাশি ওই দুই তরুণীর বাপের বাড়ির কাছে ১০ লক্ষ টাকা চেয়ে চাপ দেওয়া হয়। ঘটনার নিষ্পত্তি চেয়ে দুই বোনের মা গ্রামের পঞ্চায়েতের শরণাপন্ন হন। পঞ্চায়েত থেকে তাদের ইনসাফ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ৪০ হাজার টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারি মাসে ‘জাত পঞ্চায়েত’এর সভায় শ্বশুরবাড়ির হয়ে কথা বলে ওই দুই বোনের বিরুদ্ধে বিবাহ-বিচ্ছেদের রায় দেওয়া হয়। এরপর দুই বোনের মা ‘মহারাষ্ট্র অন্ধশ্রদ্ধা নির্মূলন সমিতি’ নামক এক সংগঠনের দ্বারস্থ হলে তারাই তাকে পুলিশের কাছে নিয়ে যায়। লিখিত অভিযোগ পেয়ে গত বৃহস্পতিবার পুলিশ দুই বোনের দুই স্বামী, শাশুড়ি ও কয়েকজন পঞ্চায়েত সদস্যদের গ্রেফতার করে।