instability
নয়াদিল্লি: ভারত জুড়বে ‘ইন্ডিয়া’! এটাই এখন বিরোধী জোটের অন্যতম স্লোগান হয়ে উঠেছে। দিল্লি থেকে বিজেপিকে হটাতে বিরোধীরা যে ‘ইন্ডিয়া’ জোট গঠন করেছে সেখানে কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএমের পাশাপাশি রয়েছে দেশের ২৮টি অ-বিজেপি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু বাংলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে লাগাতার প্রতিবাদ করে চলেছে রাজ্য কংগ্রেস। একই ভাবে পাঞ্জাব এবং দিল্লিতে ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলন করছে কংগ্রেস। শুধু তাই নয়, ‘ইন্ডিয়া’ জোট বৈঠকের আগে একাধিকবার কংগ্রেস অভিযোগ করে বলেছে তৃণমূল ও আম আদমি পার্টির সঙ্গে বিজেপির ‘সেটিং’ আছে। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে বহু চর্চা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেস এখনও তৃণমূলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করে চলেছে। সেই সঙ্গে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস এবং দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে আগের মতোই সরব হাত শিবির। অন্যদিকে দিল্লি ও পাঞ্জাবে আম আদমি পার্টির বিরুদ্ধে কংগ্রেস আগের থেকে আক্রমণাত্মক ভাব কিছুটা হলেও কমাতে পেরেছে। যদিও তা সম্পূর্ণভাবে মিটে যায়নি। এই পরিস্থিতিতে ‘ইন্ডিয়া’ জোটে এই ইস্যুগুলি নিয়ে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে।
পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, দিল্লি, পাঞ্জাবে আসন সমঝোতা যে কার্যত হবে না, সেই বিষয়টি মুম্বইয়ের বৈঠকে উঠে এসেছে। তাই বৈঠকে সকলেই বলেছেন ‘যতদূর সম্ভব’ আসন সমঝোতা করতে হবে। বলাবাহুল্য ‘যতদূর সম্ভব’ বলতে নেতারা কি বোঝাচ্ছেন তা স্পষ্ট নয়। অর্থাৎ উপর থেকে ‘ইন্ডিয়া’ জোটকে মসৃণ দেখালেও, সেখানে হাজির হওয়া ২৮টি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের চোখমুখে ‘ফিলগুড লুক’ দেখা গেলেও অশান্তির চোরাস্রোত যে বইছে সেটা বুঝতে কষ্ট হয় না। রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন এই অবস্থার সুযোগ নিতে চাইবে বিজেপি। তাই বিরোধীদের আশঙ্কা যেভাবে জোটের মধ্যে থাকা একাধিক দলের মধ্যে পারস্পরিক টানাপড়েন চলছে তাতে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের রণকৌশল ‘লিক’ হয়ে বিজেপি শিবিরে চলে যাবে না তো? এখনই প্রশ্ন উঠছে যে শুক্রবারের বৈঠকে রাহুল গান্ধীকে বেশি বলতে দেওয়া হয়েছিল। সিপিএমকেও বেশি সময় দেওয়া হয়।
শুধু তাই নয়, যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনের আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা বৈঠক স্থল ছেড়ে দ্রুত বিমান ধরে কলকাতায় ফিরে আসেন। যদিও তৃণমূলের দাবি ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা থেকেই বিমান ধরে তাঁরা কলকাতায় ফিরে এসেছেন। সেখানে অন্য কোনও মানে খোঁজার চেষ্টা বৃথা। কিন্তু এই ছোট ছোট বিষয়গুলি আগামী দিনে বড় হয়ে উঠবে না, তা কিন্তু নিশ্চিত করে এখনই বলা যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে এই জোট বিজেপির সঙ্গে সমানে সমানে পাল্লা দেওয়ার মতো জায়গায় চলে এসেছে তা বলা যাচ্ছে না। যদিও বিরোধীদের দাবি এই জোটকে ভয় পেতে শুরু করেছে বিজেপি। তাই নতুন করে বিরোধী শিবিরের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে হানা দিতে শুরু করবে সিবিআই ও ইডি, এই আশঙ্কার কথা বলেছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। তাই পারস্পরিক দূরত্ব কমিয়ে ‘ইন্ডিয়া’ জোট কতটা মসৃণ গতিতে এগিয়ে যেতে পারে সেটাই দেখার।