নয়াদিল্লি: করোনা ভাইরাস কোভিড ১৯ সংক্রমণ রুখতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই জারি হয়েছে লকডাউনে। ভারতেও মার্চ মাসের শেষ থেকে লকডাউন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সেই লকডাউনের জেরেই এই দেশে মৃত্যুর হার রেকর্ড হারে কমেছে, এমনই দাবি সংবাদসূত্রের। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যেখানে বিভিন্ন দেশের মৃত্যুর হার হু হু করে বেড়েছে, সেখানে ভারতের চিত্র ঠিক উল্টো।
সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুসারে, ভারতে কোভিড ১৯ ভাইরাসের জেরে মৃত্যু হয়েছে ৭১৮ জনের। আক্রান্তের সংখ্যা ২৩ হাজার ছাড়িয়েছে। মোট করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৫,২৫,০০০ জনের। এই পরিসংখ্যান অনুসারে, আক্রান্তের হার ৪ শতাংশ। যেখানে মার্কিন মুলুকে এই হার ১৮ শতাংশ। করোনার জেরে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলির বিভিন্ন শহরেও মৃত্যু সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। উদাহরণ হিসেবে উঠে এসেছে নেদারল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার মতো ইতালিরও বেশকিছু শহরের নাম। সেদিক থেকে ভারতে মৃত্যুর হার কম কেন? বিশেষজ্ঞরা এর প্রধান কারণ হিসেবে লকডাউনের কথা বলেছেন। ২৫ মার্চ থেকে দেশে লকডাউন জারি হওয়ায় পথ দুর্ঘটনা বা রেল দুর্ঘটনার সম্ভাবনা তৈরি হয়নি বলেই মৃত্যুহারের বিষয়ে স্বস্তিতে রয়েছে ভারত।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮ সালে ভারতে পথদুর্ঘটনায় দেড় লক্ষেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই বিষয়ে আমেদাবাদ পুরসভার তরফে এক সিনিয়র স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, 'লকডাউন শেষ হলে মৃত্যুর হার বাড়তে পারে।' কলকাতা ও বেঙ্গালুরুতে চালু অন্ত্যেষ্টি ফিউনেরাল পরিষেবা সংস্থার তরফে শ্রুতি রেড্ডি বলেন, 'এটা আমাদের কাছে বিস্ময়কর ব্যাপার।' সংস্থার পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেও যেখানে অন্তত ৫টি সৎকারের কাজ হতো, বর্তমানে তা কমে ৩টিতে দাঁড়িয়েছে।
ফিউনেরাল ব্যবসার সাম্প্রতিক ক্ষতির কথা প্রসঙ্গে শ্রুতি রেড্ডি আরও জানিয়েছেন, ক্ষয়ক্ষতির কথা ভেবে কর্মীদের বেতন কাটারও নির্দেশ দিয়েছে তাঁদের সংস্থা। পুরসভার তথ্য অনুযায়ী, মুম্বইয়ে গত বছর মার্চ মাসে মৃত্যুর হার যা ছিল, তা থেকে প্রায় ২১ শতাংশ কমেছে চলতি বছরের মার্চ মাসে। একইভাবে মৃত্যুর হার কম দেখা গেছে আমেদাবাদেও। প্রায় ৬৭ শতাংশ মৃত্যুর হার কমেছে আমেদাবাদে।