সাবধান! আপনার ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রি করছে সরকার! লাটে জনতার গোপনীয়তা

সাবধান! আপনার ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রি করছে সরকার! লাটে জনতার গোপনীয়তা

নয়াদিল্লি: ডিজিটাল ইন্ডিয়া। এই ইন্টারনেটের যুগে চাওয়া আর পাওয়ার মাঝে একটা ক্লিকের ফারাক। এই নেটদুনিয়ার দৌলতে জনসাধারণের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার অভিযোগ নতুন নয়।  ভুরি ভুরি গবেষণায় উঠে এসেছে সোশ্যাল মিডিয়া, বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন কীভাবে ব্যবহারকারীর গোপন তথ্য সংগ্রহ করে। ফেসঅ্যাপ বা অন্যান্য থার্ড পার্টির অ্যাপ্লিকেশনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের কথা বহুবার শোনা গেছে। এবার যানবাহন সংক্রান্ত গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগ উঠল।

যানবাহন সংক্রান্ত তথ্যের ক্ষেত্রে সরকারি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন এমপরিবহনের নাম হয়তো অনেকেই শুনেছেন। ব্যবহারও করেন হয়তো। ন্যাশনাল ইনফরমেটিক্স সেন্টারের (এনআইসি) তত্ত্বাবধানে চলে এই অ্যাপ্লিকেশনটি। কিন্তু এটা ছাড়াও নেটদুনিয়ায় শতাধিক অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে, যার মাধ্যমে সহজেই পেতে পারেন যানবাহন সংক্রান্ত খুঁটিনাটি তথ্য। আর তা ঘিরেই শুরু হয়েছে জল্পনা।

সরকারের ঘরে যে নাগরিকদের সমস্ত তথ্য থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রশ্ন হল থার্ড পার্টির বাকি অ্যাপ্লিকেশনগুলো নিয়ে। অ্যান্ড্রয়েডের গুগল প্লে স্টোরে উঁকি মারলেই সন্ধান পাওয়া যাবে এরকম বিভিন্ন অ্যাপ। যেখান থেকেও আপনি পেতে পারেন যানবাহন সংক্রান্ত তথ্য। কিন্তু এইসব থার্ড পার্টি ভেন্ডরদের কাছে যানবাহনের মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গেল কী করে? গত বছরের শেষের দিকেই সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছিল চাঞ্চল্যকর তথ্য। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, মার্সিডিজ, আইসিআইসিআই লোম্বার্ড, বাজাজ অ্যালায়েঞ্জের মতো সংস্থাগুলি যানবাহনের তথ্য কিনেছিল।

মিনিস্ট্রি অফ রোড ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড হাইওয়েজ-এর অধীনস্থ প্রায় ২৫ কোটি বিভিন্ন ধরনের গাড়ির তথ্য নিয়েছিল তারা। এই তালিকায় রয়েছে অন্যান্য সংস্থার নামও। সূত্রের খবর, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে জনসাধারণের এই তথ্যপঞ্জি বিক্রি করে প্রায় ৬৮ কোটি টাকা পেয়েছে সরকার। শুধুমাত্র ২০১৯ সালেই তথ্য বিক্রির বিনিমিয়ে আয়ের পরিমাণ ২১ কোটি টাকা। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, সিটি ব্যাঙ্ক, অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক, ইয়েস ব্যাঙ্কের মতো ৩০টি ব্যাঙ্ক রয়েছে ক্রেতার তালিকায়। ব্যাঙ্ক, অটোমোবাইল কিংবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কাছে এভাবে গোপন তথ্য সরবরাহের বিরোধিতা করেন অনেকেই।

এমনকী, নেটিজেনদের একাংশ মনে করেন, তথ্য সুরক্ষার উপযুক্ত কোনও আইন না থাকায় এই ধরনের কাজের মাত্রা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। ইন্টারনেট ফ্রিডম ফাউন্ডেশনের (আইএফএফ) তরফে সিদ্ধার্থ দেব জানিয়েছেন, জনসাধারণের তথ্য সুরক্ষিত রাখার ক্ষেত্রে কড়া পদক্ষেপ করা উচিত। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, ইন্টারনেটের যুগে আপনার সমস্ত গোপন তথ্য সুরক্ষিত তো?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × two =