নয়াদিল্লি: ব্রিটেনে নতুন করে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের যে শৃঙ্খল তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে আতঙ্কের কোনও কারণ নেই বলে দেশবাসীকে আশ্বাসবাণী শোনালেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন৷ সাংবাদিকদের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই সময়ে আমি বলতে পারি, কাল্পনিক পরিস্থিতির সম্মুখীন হবেন না, কাল্পনিক কথাবার্তায় কান দেবেন না এবং কাল্পনিকভাবে আতঙ্কিত হবেন না। সরকার পুরোপুরি সতর্ক রয়েছে। গত এক বছরে, যেমনটা আপনারা সবাই দেখেছেন, মানুষের সুরক্ষার জন্য আমরা সবরকম ব্যবস্থা নিয়েছি। যদি আমায় আফনারা জিজ্ঞেস করেন, তাহলে আমি বলব অতিরিক্ত আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই৷’’
নতুন করে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে আজ সকালে মনিটরিং গ্রুপের একটি বৈঠক করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক৷ ব্রিটেনে মারাত্মকভাবে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় সেই বৈঠকে৷ ইতিমধ্যেই কানাডা, সৌদি আরব সহ একাধিক ইউরোপের দেশ ব্রিটেনগামী এবং বির্টেন থেকে আসা সবরকম উড়ান পরিষেবা নিষিদ্ধ করেছে৷ এদিন পরিস্থিতির খবর পাওয়ার পরেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল টুইট করেন, ‘‘ব্রিটেনে নতুন করে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এটি খুবই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আমি সরকারকে দ্রুত ব্রিটেনের সমস্ত উড়ান বাতিল করার অনুরোধ জানাব৷’’
গত সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ পূর্ব ইংল্যান্ডে প্রথম এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। তারপরেই খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে লন্ডন সহ ব্রিটেনের অন্যান্য এলাকায়। ফলে বড়দিনের উৎসবের আগেই বিলেতভূমিকে গ্রাস করেছে নতুন করে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস৷ সম্প্রতি ব্রিটেন থেকে ফেরা ইটালির এক বাসিন্দা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন৷ রবিবার ব্রিটেনের স্বাস্থ্যসচিব ম্যাট হ্যানকক জানান, ‘‘এই নতুন ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের বাইরে।’’
এদিকে, পরিবর্তিত পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করতে বৈঠকে বসে ব্রিটেনের সরকার। ভ্রমণ সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় ওই বৈঠকে৷ ইউরোপ জুড়ে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারির কথা বলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷ ব্রিটেন সরকারের এক মুখপাত্র জানান, আন্তর্জাতিক ভ্রমণ নিয়ে আলোচনা, বিশেষ করে ব্রিটেন থেকে এবং ব্রিটেনে আসা পণ্য পরিবহনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে এই বৈঠক৷ ইতিমধ্যেই সীমান্ত পেরিয়ে মানুষ এবং পণ্য ঢোকার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডনস জানিয়ে দিয়েছে, নৌকা বা জলপথে আসা ব্যক্তিদের সেদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না। ইউরোপ জুড়ে ইতিমধ্যেই বিপদ সঙ্কেত বাজানো শুরু হয়ে গিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক মুখপাত্র জানান, ‘‘ইউরোপজুড়ে যেখানে ব্যপকভাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে, সেখানে তাদের আরও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে৷’’ফলে সব মিলিয়ে বড়দিনের আগে ভাইরাসের ভ্রুকূটিতে থরহরিকম্প ইংরেজদের দেশ৷