নয়াদিল্লি: বৃহস্পতিবার নেটপাড়ায় এক বিয়োগাতুর মুহূর্ত ধরা পড়ল। চিকিৎসক দীপশিখা ঘোষ নিজের টুইটারে এই মুহূর্তের কথা শেয়ার করেছেন৷ তার পর থেকেই নেট দুনিয়া উদ্বেল এই ঘটনায়৷ তিনি টুইটারে এক করোনা আক্রান্ত মা ও তাঁর ছেলের চিরবিচ্ছেদের সাক্ষী থাকার করুণ অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন।
চিকিৎসক দীপশিখা লিখেছেন, ‘আজ আমার শিফট শেষ হওয়ার সময় এক রোগীর হয়ে তাঁর আত্মীয়কে ভিডিও কল করে দিলাম। কারণ তিনি ফোন করার মতো শারীরিক অবস্থায় ছিলেন না। কেউ চাইলে আমাদের হাসপাতালে আমরা এরকম সাহায্য করেই থাকি। ওই রোগীর সন্তান ভিডিও কলে আমার সময় থেকে কয়েক মিনিট চেয়েছিলেন। তারপর তিনি তাঁর মরণাপন্ন মাকে একটি গান গেয়ে শোনান।’
পরে আরও একটি পোস্ট করেন দীপশিখা৷ সেখানে তিনি পরবর্তী অভিজ্ঞতার কথা লেখেন৷ পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমি ফোনটি ধরে দাঁড়িয়ে শুধু মা ও ছেলের দিকে তাকিয়েছিলাম। গান চলছিল। ১৯৭৩ সালের কিশোর কুমারের সুপারহিট গান ‘তেরা মুঝসে হ্যায় পহেলা কা নাতা কোয়ি’৷ বাকি নার্সরা নীরবেই এসে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। গানের মাঝখানেই ছেলেটি ভেঙে পড়লে তিনি গান শেষ করেন। পরে মায়ের শরীরের খবর নিয়ে আমাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফোন রেখে দিলেন।’ এটাই ছিল ওই কোভিড আক্রান্ত মহিলা ও তাঁর ছেলের মধ্যে শেষ কথোপকথন। পরে আরও একটি পোস্টে দীপশিখা লিখেছেন, ছেলেটি যখন গান গাইছিলেন, তখন তাঁদের চোখ জলে ভরে গিয়েছিল। সেই মুহূর্তটি তিনি ও তাঁর সঙ্গী নার্সরা কখনওই ভুলতে পারবেন না। পরে যে যার কাজে ফিরে গেলেও, গানটি যেন রয়েই গেল মনের মধ্যে। দীপশিখা লিখেছেন, ‘ওই গানটা আমাদের বদলে দিয়ে গেল। অন্তত আমাকে তো বটেই। এই গানটা ওঁদেরই হয়ে থেকে যাবে আজীবন।’ দীপশিখার করা টুইটগুলো মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে৷ এই বিষাদময় পোস্টগুলি দেখে মন খারাপ নেটিজেনদের।