বারাসত: শুক্রবার বারাসত লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত অশোকনগরে দলীয় নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে আসেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি। তাঁর হেলিকপ্টার যাতে ‘সঠিকভাবে’ নামতে পারে তার জন্য সভার আগের দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার থেকেই অশোকনগরের হরিপুর মাঠ সংলগ্ন এলাকার শতাব্দী প্রাচীন বহু গাছের ডালপালা এমনভাবে কেটে ফেলা হয় যার ফলে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এলাকার সবুজায়ন। এমনভাবে গাছগুলি কাটা হয় যে, সেগুলি আদৌ আর বাঁচবে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন পরিবেশবিদরা।
এমনকি ভেঙে ফেলা হয় অশোকনগর নেতাজী শতবার্ষিকী কলেজের পাঁচিলের বেশ কিছুটা অংশও। শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার নামানোর জন্য। শুধু তাই নয়, সভার প্রস্তুতির জন্য হাইটেনশন ইলেকট্রিক তার পর্যন্ত কেটে ফেলে কল্যাণগড় অঞ্চলে বেশ কয়েক ঘন্টা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা হয়। এই ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার ঘটেছে। মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার নামানোর জন্য যেভাবে এলাকার সবুজ ধ্বংস করা হলো এবং সাধারণ মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হলো তার প্রতিবাদে শনিবার সকালে পথে নামে ভারতের ছাত্র ফেডারেশন অশোকনগর শহর আঞ্চলিক কমিটি।
সংগঠনের পক্ষ থেকে ঐ একই স্থনে বৃক্ষরোপণ করা হয়। বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভ দেখায় ছাত্রছাত্রীরা। এসএফআই অশোকনগর আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক আকাশ করের মন্তব্য, “গতকাল মাননীয়ার হেলিকপ্টার নামবে বলে অশোকনগরের হরিপুর মাঠ সংলগ্ন শতাব্দীপ্রাচীন বহু গাছের ডালপালা কেটে প্রায় ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে এলাকার সবুজ। দীর্ঘক্ষণ লোডশেডিং করিয়ে মানুষকে এই গরমে হয়রানির শিকার করা হয়েছে। উনি বলেছিলেন এই ভোটে ৪২ এ ৪২ করবেন, তা তো আর হচ্ছেনা কিন্তু রাজ্যের তাপমাত্রা প্রায় ৪২ ডিগ্রি ছুঁতে চলল। এই পরিস্থিতিতে সবুজ ধ্বংস করে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে ঠেলা দেওয়া হচ্ছে। অশোকনগরের মানুষ দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। আমাদের প্রিয় শহরের সবুজ ধ্বংস করা হচ্ছে শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর স্বৈরাচারী মনোভাব ও অহংকারকে মান্যতা দিতে। মানুষ এর জবাব দেবেন। ভোট আসবে যাবে কিন্তু এভাবে পরিবেশ ধ্বংস, মানুষের হয়রানি মানা যায় না। তারই বিরুদ্ধে আজকের এই প্রতিবাদ বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে৷” এলাকার মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া মিলেছে ছাত্রদের এই উদ্যোগে।