আজ বিকেল: পাঁচ হাজার টাকার জন্য যেখানে খুনোখুনি লেগেই আছে। বাবা সময়মতো টাকা শোধ করতে পারেননি বলে একরত্তি মেয়েকে ধর্ষণের পর নৃশংস খুন করে দেয় যে দেশের মানুষ সেই দেশেই কি না বসবাস করেন তারিক আহমেদের মতো লোকজন। উপত্যকা, হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন ভূস্বর্গ কাশ্মীরের নামই করছি। বুলেট বারুদের গন্ধ ছাপিয়েও যে উপত্যকায় বিদ্যমান সততা মানবিকতা।
তারিক আহমেদ বুলেট বিধ্বস্ত, গোলাগুলির স্বর্গরাজ্য কাশ্মীরের এক ক্যাব চালক। উগ্রপন্থী সমস্যা, সেনা টহল, প্রতিবেশী দেশের গোলাগুলি বর্ষণ যাঁদের নিত্যসঙ্গী তাঁরা তো আর সামান্য বিপদকে বিপদ বলেই মনে করেন না। এমনিতেই নিয়ন্ত্রণরেখার ওপার থেকে মর্টার শেল ছুটে এলেসেই কাশ্মীরীদের উদ্দেশ্যেই বিদ্বেষ মূলক বার্তা দিতে থাকে এক শ্রেণির মানুষ, সেনা ঘটনাস্থলে নেমে শুরু করে টহলদারি, পুলিশ জেরায় জেরায় জেরবার করে দেয়। এতকিছুর মাঝেও যাঁরা এসব নিয়েই দিনযাপন করছেন সেই কাশ্মীরীদের প্রতি কোনওরকম সহানুভূতি দেখানো তো দূরঅস্ত বরং চিড়িয়াখানার জীব হিসেবেই গোটা দেশ তাদের দেখে। এত সমস্যা সত্ত্বেও সেই ভূস্বর্গেই যে মানবতা সততা হাত ধরাধরি করে হাঁটে তা প্রমাণ করে দিলেন তারিক আহমেদ। হাজার নয়, একেবার ১০ লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দিয়ে নজির গড়লেন এই ক্যাবচালক। তিনি না দিতেই পারতেন, কেউই তাঁর গেঁটি ধরে টাকা আদায় করতে আসত না, ভ্রমণার্থীরা যে তাঁর গাড়িতেই টাকার ব্যাগ ফেলে নেমে গিয়েছেন এমন প্রমাণও ছিল না। তবুও তিনি মানবিকতার খাতিরে মালিকের হাতেই দশলাখি ব্যাগ তুলে দিলেন। আর হারানিধি ফিরে পেয়ে কীভাবে যে ওই ক্যাব চালককে ধন্যবাদ দেবেন বুঝতেই পারছিলেন না ভোপালের ওই পরিবারের কর্তা।