তিয়াষা গুপ্ত: রাফালে নিয়ে সচরাচর প্রধানমন্ত্রী কিংবা প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে মুখ খুলতে দেখা যায় না। অনেকটা সেই নজির ভেঙেই সংসদে রাফালে নিয়ে কথা বলেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। এরপর সেই নিয়ে দলের মধ্যে তারিফও জোটে তাঁর। কিন্তু তাঁর সেই বক্তব্যকে হাতিয়ার করে আসরে নামতে দেরি করলেন না কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। তিনি রাফালে নিয়ে প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক। আগে বহুবার সংসদের ভেতরে ও বাইরে এই নিয়ে ঝড় তুলেছেন। এদিন তাঁর অভিযোগ, নির্মলা সীতারমন সংসদে মিথ্যে বলেছেন। তিনি বলেছিলেন, মোদী সরকার হিন্দুস্থান অ্যারোনেটিক্স লিমিটেডকে ১ লাখ কোটি টাকার বরাত দিয়েছিল। রাহুলের দাবি, সেই বিবৃতির স্বপক্ষে প্রতিরক্ষামন্ত্রী সংসদে প্রমাণ পেশ করুন। নাহলে ইস্তফা দিন।
মিডিয়া রিপোর্টে প্রকাশ পায়, এক লাখ কোটি টাকা কেন, হ্যালকে একটি টাকার অর্ডারও দেওয়া হয়নি। মিডিয়া রিপোর্ট সঙ্গে নিয়ে রাহুল ট্যুইট করেন। বলেন, আপনি যখন একটি মিথ্যে বলবেন, তখন সেই মিথ্যে ঢাকার জন্যে আরো মিথ্যে বলার কলজের জোর থাকা দরকার। তাঁর দাবি আগামীকাল নিশ্চয়ই মন্ত্রী সংসদে তাঁর বক্তব্যের পক্ষে প্রমাণ দেবেন, নাহলে পদত্যাগ করবেন।
শনিবারই রাহুল অভিযোগ করেন, নরেন্দ্র মোদী হ্যালকে দুর্বল করেছেন। তিনি সাহায্য করেছেন তাঁর স্যুটবুটের বন্ধুকে। হ্যালের করুণ অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে মিডিয়া রিপোর্ট সামনে আসার পর রাহুল এই বোমা ফাটান।
কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরযেওয়ালা ট্যুইট করে বলেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মিথ্যে সামনে এসে গেল। প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, ১ লাখ কোটি টাকার অর্ডার দেওয়া হয়েছে হ্যালকে। এক পয়সাও আসেনি। একটি অর্ডারও সই হয়নি। এই প্রথম হ্যালকে ১০০০ কোটি টাকা ঋণ করতে হয়েছে কর্মীদের মাইনে দেওয়ার জন্য।
হ্যাল নিয়ে কংগ্রেসের অভিযোগ
রাফালে চুক্তি করার ক্ষেত্রে সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হিন্দুস্থান অ্যারোনেটিক্স লিমিটেডের স্বার্থ উপেক্ষা করেছে। রাফালে বিমান প্রস্তুতকারী ফরাসি সংস্থা ডসল্ট হ্যালকে প্রযুক্তি হস্তান্তর করতে অস্বীকার করে। তারা রিলায়েন্স ডিফেন্সের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। ইউপিএ সরকারের আমলে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পরে যে দাম স্থির হয়েছিল, তার থেকে বেশি দামে যুদ্ধবিমান কেনা হচ্ছে।
মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১২৬ টি যুদ্ধবিমান কেনার রিকোয়েস্ট ফর প্রপোজাল বাতিল করে দেওয়া হয়। ২০১৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ৮.৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যে ৩৬ টি রাফালে ফাইটার জেট ক্রয়ের চুক্তি হয়।
হ্যাল নিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী
নির্মলা সীতারমন এইচএএল অর্থাৎ হ্যালের বরাত না পাওয়াকে কুম্ভিরাশ্রু বলে কটাক্ষ করেন। দেশকে ভুল পথে কংগ্রেস চালিত করছে বলেও অভিযোগ সীতারমনের। তাঁর কথায়, কংগ্রেস বলছে, এনডিএ সরকার ১২৬ টির পরিবর্তে ৩৬ টি বিমান কিনছে। কংগ্রেস ১৮ টি বিমান কিনত। সেখানে আমরা ৩৬ টি বিমান কিনছি।