ত্রিচি: ১১ মাসের ছেলের হাতে করোনায় মৃত মায়ের অস্থি৷ সেটাকে সঙ্গী করেই অন্য দেশে করোনায় মারা যাওয়া মায়ের অস্থি নিয়ে দেশের মাটিতে পা রাখল সে৷ মর্মান্তিক এই দৃশ্যের সাক্ষী থাকল তামিলনাড়ুর ত্রিচি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর৷ বিমানবন্দর থেকে শিশুটিকে নিয়ে যান তার বাবা৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাল্লাকুরিচি জেলায় ভেলাভান এবং তাঁর ৩৮ বছরের স্ত্রী ভারতী ও তিন সন্তানকে নিয়ে সুখেই দিন কাটছিল৷ কিন্তু বাধ সাধল তাঁদের বড় ছেলের হঠাৎই কিডনির অসুখ ধরা পড়ায়৷ অনেক টাকা ধার করে চিকিৎসা করিয়েও তাঁরা প্রথম সন্তানকে বাঁচাতে পারেননি৷ সন্তান হারানোর শোকের সঙ্গে সঙ্গে ওই দম্পতির ঘাড়ে চাপে বড় ছেলের ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ জোগানো বিপুল ঋণের বোঝা৷ এই ঋণ শোধ করতেই প্রচুর অর্থের প্রয়োজন৷ তাই গত মার্চ মাসে ৯ মাসের ছোট ছেলে দেবেশকে কোলে নিয়ে ভারতী দুবাই চলে যান কাজ করতে৷ সেখানেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৯ মে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন তিনি৷ সেখানেই তাঁকে সমাহিত করা হলেও, বিদেশ বিভুঁইয়ে একদম একা হয়ে যায় ১১ মাসের দেবেশ৷
সেদেশে ভারতীর বন্ধুরাই ছোট্ট শিশুটির দেখাশোনার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেন৷ এরপর দুবাইতে বসবাসকারী তামিলনাড়ুর ক্ষমতাসীন দল ডিএমকের এক সংগঠক মহম্মদ মিরানকে শিশুটির কথা জানানো হলে তিনিই বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের নজরে আনেন৷ এরপরই তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী শিশুটিকে যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেন৷ দুবাই থেকে ত্রিচিগামী ইন্ডিগোর বিমানের এক যাত্রীর সঙ্গেই ১১ মাসের ওই শিশুটিকে ভারতে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ শিশুটির সঙ্গে তার মায়ের অস্থিও পাঠানো হয়৷ সতীশ কুমার নামে ওই যাত্রী শিশুটিকে নিয়ে এসে ত্রিচি বিমানবন্দরে তার বাবা ভেলাভানের হাতে তুলে দেন৷ ভেলাভান জানিয়েছেন, কাল্লাকুরিচির এক সাংসদ তাঁর ১১ মাসের সন্তানের পড়াশোনার দায়িত্ব নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন৷ সেই সঙ্গে অর্থ সাহায্য করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি৷