নয়াদিল্লি: করোনা সংকট মোকাবিলায় দেশবাসীকে ‘মহাশক্তি’ জাগ্রত করার আর্জি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ আগামীকাল অর্থাৎ ৫ এপ্রিল রাত ৯টায় ৯ মিনিটের জন্য ঘরের আলো নিভিয়ে নিজের বাড়ির দরজায় অথবা বারান্দায় মোমবাতি, প্রদীপ, টর্চ বা মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালানোর আবেদন জানিয়েছেন তিনি৷ তাঁর এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর৷
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী ভিডোও বার্তা সম্প্রচারিত হওয়ার পরই থারুর বলেন, অর্থনীতির উপর গুরুত্ব না দিয়ে ৯ নম্বরের উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ ট্যুইট করে তিনি বলেন, ‘‘নয় সংখ্যার সঙ্গে সুন্দরভাবে হিন্দুত্বকে মিশিয়ে দিয়েছেন তিনি। এটা কাকতালীয় নয়। রামনবমীর দিন সকাল ৯ টায়, ৯ মিনিটের জন্য বক্তৃতা দিয়েছেন তিনি৷ তাতে আবার আমাদের ৯ মিনিটের জন্য প্রদীপ আর মোমবাতি জ্বালানোর পরামর্শ দিয়েছেন৷’’
এই কংগ্রেস নেতা ট্যুইট করে আরও বলেন, রাত ৯টায় একসঙ্গে গোটা দেশে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করা হবে৷ আবার ৯ মিনিট পর সকলে একসঙ্গে আলো জ্বালতে শুরু করবে৷ এতে বিদ্যুৎ গ্রিডের উপর ব্যাপক চাপ পড়বে৷ তিনি বলেন, ‘‘রবিবার রাত ৯টায় বিদ্যুতের চাহিদা আচমকা কমবে৷ ঠিক ৯ মিনিট পর আবার চাহিদা আচমকা বাড়বে৷ এতে বিদ্যুতের গ্রিডে বিপর্যয় ঘটাতে পারেন। তাই বিদ্যুৎ দফতর ওই দিন রাত ৮টা থেকে ধাপে ধাপে লোডশেডিংয়ের চিন্তা ভাবনা করছে এবং ধাপে ধাপে তা ফিরবেও। ৯টা ৯ থেকে তা আবার স্বাভাবিক হতে থাকবে। অথচ, এই বিষটি প্রধানমন্ত্রী চিন্তাই করেননি!’’
আগামীকাল রাত ৯টায় বিদ্যুৎ গ্রিডের উপর যে প্রভাব পড়তে চলেছে, সে বিষয়ে সতর্ক করেই খান্ত হননি থারুর৷ পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশের স্টেট লোড ডিসপ্যাচ সেন্টারের একটি চিঠিও পোস্ট করেন তিনি৷ গ্রিড আধিকারিকরা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মতো, রবিবার রাত ৯টা থেকে ৯টা বেজে ৯ মিনিট পর্যন্ত অন্ধকার থাকবে দেশের প্রতিটি বাড়ি৷ দেশ জুড়ে বাড়ির আলো নেভানো হলে উত্তরপ্রদেশের পাওয়ার গ্রিডে বিপুল চাপ পড়বে। অন্তত ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাড়তি হবে। ওই ‘বিপুল পরিমাণ’ বিদ্যুৎ জোরাল আঘাত করবে পাওয়ার গ্রিডে।
দুর্ঘটনা ঘটলে রাজ্য জুড়ে নেমে আসতে পারে অন্ধকার। একেই করোনায় বিধ্বস্ত দেশ৷ এর উপর বিদ্যুৎ বিপত্তি সামলাতে হলে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে বিদ্যুৎ দফতরের কর্তাদের৷ এ নিয়ে দফতরের কর্তাদের চিঠি পাঠিয়েছেন এসএলডিসি-র ডিরেক্টর রাম স্বরথ। তাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, রবিবার রাত ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে ধাপে ধাপে যেন লোডশেডিং করা হয়। তাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পালনের সঙ্গে সঙ্গে সামলানো যাবে বিপর্যয়।