তেলেঙ্গানা: নিজেকে ও পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে একটি গাছে বাড়ি তৈরি করেন তেলেঙ্গানার নালাগোন্ডা জেলার বাসিন্দা ১৮ বছরের করোনা আক্রান্ত যুবক শিবা৷ সেলফ আইসোলেশন হিসাবে সেখানেই থাকতে শুরু করেন বি টেকের ছাত্র শিবা ৷ শেষপর্যন্ত মঙ্গলবার করণামুক্ত হয়ে ঘরে ফেরেন ওই যুবকটি।
কিছু দিন আগে শিবার শরীরে করোনা নামক মারণ ভাইরাস থাবা বসায়৷ সেই রিপোর্ট দেখে গ্রামের স্বেচ্ছাসেবীরা তাঁকে তাঁর পরিবার থেকে দূরে থাকতে বলেছিলেন৷ যেহেতু শিবার পুরো পরিবার একটি ছোট জায়গায় বাস করে। তাই এই ভাইরাস যাতে তাঁর পরিবারকে প্রভাবিত না করে, তাই তোশক, বালিশ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ির নিকটবর্তী একটি গাছে এই বাড়িটি তৈরি করে সেখানে থাকতে শুরু করেন। জানা গিয়েছে, তাঁর গ্রাম নালাগোন্ডায় ৩৫০টি পরিবারের বাস হলেও বিপদে কিন্তু তাঁকে কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি। সকলেই করোনায় সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। নিকটবর্তী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র গ্রাম থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে এবং হাসপাতালও ৩০ কিলোমিটার দূরে। শিবাও পড়াশোনার জন্য হায়দরাবাদে ছিলেন৷ কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয় কলেজগুলোও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিবা বাড়ি ফিরে আসেন। খুব সম্প্রতি ১৩ মে ওই জেলায় একটি কোভিড আইসোলেশন কেন্দ্র চালু হলেও খুব কম বাসিন্দাই এই সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।
শিবা প্রথ ব্যক্তি নন যিনি আলাদাভাবে থাকতে গাছে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁর গ্রামে অনেকে বাথরুমে, অস্থায়ী কুঁড়েঘরে বিচ্ছিন্ন থাকা শুরু করেছেন এবং এর জন্য একই রকম পন্থা নিয়েছেন তাঁরাও। কারণ পরিস্থিতিতে প্রত্যন্ত গ্রামের মধ্যবিত্ত বাড়িগুলিতে সবচেয়ে মারাত্মক সমস্যা হল সেলফ আইসেলেশন। অধিকাংশ বাড়িতেই সে রকম আলাদা থাকার কোনও ব্যবস্থা থাকে না। উল্লেখ্য গত বছর দেশব্যাপী লকডাউনের আগে পর্যন্ত পুরুলিয়া জেলার সাতজন আদিবাসী পরিযায়ী শ্রমিক কাজ থেকে বাড়ি ফিরে একই ভাবে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে রাখতে বট এবং দু’টি আমের গাছে আলাদা থাকার জায়গা তৈরি করেছিলেন।