নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছে ভারত৷ তাঁর ছত্রছায়ায় দিন রাত এক করে কাজ করে চলেছে ‘টিম মোদি’৷ এই বিশেষজ্ঞ দলে রয়েছেন আমলা, বিজ্ঞানী, গবেষক এবং চিকিৎসকরা৷ যাঁরা মানুষের প্রাণ বাঁচাতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন৷ তাঁদের মধ্যেই কয়েকজনের পরিচয় তুলে ধরা হল৷
লব আগরওয়াল: অন্ধ্রপ্রদেশ ক্যাডারের ১৯৯৬ ব্যাচের আইএএস অফিসার লব আগরওয়াল হলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্ম সচিব৷ কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পাশাপাশি তিনি অন্যান্য মন্ত্রকগুলির সঙ্গেও ঘনিষ্টভাবে কাজ করে চলেছেন৷ সর্বোপরী বিভিন্ন মন্ত্রককে তিনি প্রস্তুত করছেন কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য৷ যে সকল জায়গাগুলিতে সংক্রমণের প্রকোপ অত্যন্ত বেশি, সেই জায়গাগুলিতে কী কৌশল অবলম্বন করা হবে, তার নীলনকশা তৈরি করছেন আগরওয়াল৷
তিনি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হবে বিশেষ টিম৷ প্রতিটি রাজ্যে কতজন আক্রান্ত হলেন এবং কতজনের মৃত্যু হয়েছে, সেই সম্পর্কে নির্দিষ্ট ডাটা তৈরি করা হবে৷ রাজ্যগুলির সঙ্গেও ক্রমাগত যোগাযোগ রেখে চলেছেন আগরওয়াল৷ দু’চোখের পাতা এক করার সময়টুকুও নেই তাঁর৷ তিনি বলেন, ভারতের মোট জনসংখ্যার ১ শতাংশ মানুষও যদি লকডাউন ভাঙে, তাহলে এই ভাইরাসের সংক্রমণ রোখা কঠিন হয়ে যাবে৷ কেন্দ্র এবং রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমের কাছে তথ্য পৌঁছে দেওয়ার গুরুদায়িত্ব রয়েছে তাঁর কাঁধেই৷
ডা. রামান আর গঙ্গাখেদকর: আইসিএমআর-এর এপিডেমিকস অ্যান্ড ইনফেকসাস ডিজিজ বিভাগের প্রধান বিজ্ঞানী ডা. রামান আর গঙ্গাখেদকর৷ করোনা আক্রান্ত রোগীর নমুনা পরীক্ষার প্রোটোকল তৈরি থেকে যাবতীয় স্যাম্পল টেস্টিংয়ের দায়িত্ব তাঁর৷ কীভাবে ভাইরাস ছড়াচ্ছে, এই রোগের লক্ষণগুলি কী, কী ভাবে স্যাম্পল টেস্ট করা হবে এবং সংক্রমণ রুখতে কী কী পদক্ষেপ করতে হবে, সবটাই ব্যাখ্য করেছেন তিনি৷ গঙ্গাখেদকর বলেন, করোনা নিয়ে নানারকম মিথ ছড়িয়ে পড়েছে৷ অনেকেই বলছেন এই ভাইরাস নাকি হাওয়ার সঙ্গে ভেসে চলেছে৷ তিনি বলেন, এই বক্তব্যের কোনও ভিত্তি নেই৷ এখনও পর্যন্ত এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷
আইসিএমআর-এর অধীনে জানুয়ারি মাসে প্রথম টেস্টিংয়ের কাজ শুরু হয় একটি ল্যাবে৷ তার পর থেকে ১৪৪টি ল্যাবের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন গঙ্গাখেদকর৷ পাশাপাশি তাঁর নির্দেশিকা মেনে কাজ করছে দেশের ১৬ হাজারেরও বেশি ল্যাবরেটরি৷ কোভিড-১৯ স্যাম্পল টেস্টের নির্দিষ্ট প্রটোকল তৈরি করে দিয়েছেন তিনি৷ ল্যাবগুলিতে প্রয়োজনীয় সামগ্রীও পৌঁছে দিয়েছেন নির্দিষ্ট সময়ে৷ চিকিৎসক এবং সরকারি ও বেসরকারি ল্যাবগুলির সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ হচ্ছে তাঁকে৷ হটস্পটগুলিতে সরকার কী পন্থা নেবে, তা ঠিক করার দায়িত্বও সঁপা হয়েছে গঙ্গাখেদকরের হাতেই৷
ডা. বিনোদ পাল: এইমসের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. বিনোদ পাল বর্তমানে নীতি আয়োগের সদস্য হিসাবে কাজ করছেন৷ করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী যে ১১টি এমপাওয়ার্ড গ্রুপ তৈরি করেছেন তাঁর নেতৃত্বে রয়েছেন তিনি৷ তাঁর ছত্রছায়ায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক নিজেদের মধ্যে সাজুয্য বজায় রেখে কাজ করে চলেছে৷ বিভিন্ন স্তরে করোনাভাইরাস সংক্রমণ সম্পর্কে কী ভাবে মানুষকে সচেতন করা হবে, সেই দায়িত্ব রয়েছে তাঁর কাঁধে৷ পাশাপাশি এই মহামারি রুখতে যে গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে, তাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন ডা. পাল৷