ভোপাল: মনে আত্মবিশ্বাস আর সংকল্প থাকলে কোনও প্রতিবন্ধকতাই থামাতে পারে না স্বপ্নের উড়ান৷ এই কথাটাই প্রমাণ করে দিলেন ২৪ বছরের আঁচল গাঙ্গওয়াল৷
মধ্যপ্রদেশের নিমুচ জেলায় চায়ের দোকান রয়েছে তাঁর বাবা সুরেশ গাঙ্গওয়ালের৷ কষ্ট করে মানুষ করেছেন নিজের মেয়েকে৷ এদিন যখন টিভির পর্দায় আঁচলকে দেখলেন, তখন আনন্দে-গর্বে বুকটা ভরে উঠছিল তাঁর৷ শনিবার রাষ্ট্রপতির পদক পেলেন ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্স অ্যাকাডেমি থেকে স্নাতক ফ্লাইং অফিসার আঁচল গাঙ্গওয়াল৷ ডুন্ডিগলে ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্স অ্যাকাডেমিতে শীর্ষস্থান অধিকার করেছেন তিনি।
এই সাফল্যের পিছনের লড়াইটা একেবারেই সহজ ছিল না৷ এমনও সময় গিয়েছে, মেয়ের স্কুল-কলেজের ফি জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয়েছে সুরেশবাবুকে৷ কিন্তু লড়াই করে গিয়েছেন তিনি৷ মেয়ের স্বপ্নকে আগলে রেখেছিলেন সযত্নে৷ নিমুচের একটি বাসস্ট্যান্ডে চায়ের দোকান চালাতেন তিনি৷ সংসারে টানাটানি লেগেই থাকত৷ শত কষ্টের মধ্যেও মেয়েকে মানুষের মতো মানুষ করেন সুরেশ গাঙ্গওয়াল৷ শনিবার কম্বাইন্ড গ্র্যাজুয়েশন প্যারাডে আঁচলের হাতে তুলে দেওয়া হয় রাষ্ট্রপতির পদক৷ ১২৩ ফ্লাইট ক্যাডেটের ভারতীয় বায়ুসেনায় অফিসার হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি৷ তবে করোনা পরিস্থিতির জেরেই এদিনের অনুষ্ঠানে আঁচলের বাবা-মা উপস্থিত হতে পারেননি বলে জানা গিয়েছে৷
একটি সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক হওয়ার পর সাব-ইন্সপেক্টর পদে মধ্যপ্রদেশ পুলিশে যোগ দিয়েছিলেন আঁচল৷ লেবার ইন্সপেক্টর হওয়ার পর পুলিশের চাকরি ছেড়ে দেন তিনি৷ বায়ু সেনা বাহিনীতে যোগ দেওয়ার আগে আট মাস এই চাকরি করেছিলেন আঁচল৷ স্নাতক হওয়ার পরই আঁচল এএফসিএটি-তে অবতীর্ণ হতে শুরু করেন। ছয়বারের চেষ্টায় তিনি এসএসবি-তে সুযোগ পান। আঁচল জানান, ২০১৩ সালে উত্তরাখণ্ডের বন্যায় যে ভাবে উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী, তা দেখার পর থেকেই বাহিনীতে যোগ দিতে অনুপ্রাণিত হন তিনি৷
আঁচলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাদ সিং চৌহান৷ টুইট করে তিনি বলেন, ‘‘নীমুচে চা বিক্রেতার সুরেশ গাঙ্গওয়ালের মেয়ে আঁচল এবার যুদ্ধ বিমান ওড়াতে চলেছে৷ আঁচল আমাদের রাজ্যকে গর্বিত করেছে৷ দেশের গৌরব ও সম্মান রক্ষায় আকাশের অসীম উচ্চতায় উড়ে যাবেন তিনি৷ আমাদের মেয়েকে অনেক অভিনন্দন, আশীর্বাদ এবং শুভেচ্ছা৷’’