পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে রাজ্যকে, কেন্দ্রের অবস্থান কে সমর্থন সর্বোচ্চ আদালতের

পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে রাজ্যকে, কেন্দ্রের অবস্থান কে সমর্থন সর্বোচ্চ আদালতের

89a825b7f89207ecf41b9dce1ccb7360

নয়াদিল্লি: পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরক্ষার দায় রাজ্য সরকারেরও।বাড়ি ফেরার মরিয়া চেষ্টায় তারা সড়ক বা রেললাইন ধরে হাঁটতে গিয়ে যাতে দুর্ঘটনার কবলে না পড়েন তার জন্য নজরদারির দ্বায়িত্বও সংশ্লিষ্ট রাজ্যকেই নিতে হবে বলে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিল সর্বোচ্চ আদালত।কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সম্প্রতি একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করে জানিয়েছে   প্রতিটি রাজ্যকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যাতে পরিযায়ী শ্রমিকরা কোনওভাবেই সড়কপথ ধরে বা রেল লাইন ধরে হেঁটে বাড়ি ফেরার চেষ্টা না করেন। রাজ্যগুলোকেই এব্যাপারে তাঁদের বোঝাতে হবে এবং তাঁদের খাবার ও আশ্রয় দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এদিন সর্বোচ্চ আদালতও কার্যত কেন্দ্রের সেই অবস্থানকেই সমর্থন করেছে।

আইনজীবী অলোক শ্রীবাস্তব দেশের শীর্ষ আদালতে একটি পিটিশন ফাইল করেন। সেখানে তিনি আবেদন করেন, সুপ্রিম কোর্টের উচিত কেন্দ্রকে নির্দেশ দেওয়া যাতে এই পরিযায়ী শ্রমিকদের চিহ্নিত করে তাঁদের খাবার ও জলের ব্যবস্থা করা হয়। এই আবেদনের ব্যাপারে মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদে ট্রেনের ধাক্কায় লাইনে ঘুমিয়ে পড়া ১৬ জন শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার কথাও উল্লেখ করা হয়।শুক্রবার এই আবেদন খারিজ করে দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, “এটা আদালতের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় নয়। কারণ, কোথায় কত পরিযায়ী শ্রমিক হাঁটছেন, সেটা আদালত নজরে রাখতে পারবে না। এটা সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়। কাউকে হেঁটে ফিরতে দেওয়া হবে কিনা, যাঁরা হাঁটছেন তাঁদের খাবার ও জলের ব্যবস্থা হচ্ছে কিনা প্রভৃতি বিষয় সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য। কেউ রেললাইনে ঘুমিয়ে পড়েছেন কিনা, সেটা কী ভাবে সুপ্রিম কোর্ট নজর রাখতে পারবে।”

কেন্দ্রের তরফে সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা সর্বোচ্চ আদালতকে জানান যে, ইতিমধ্যেই পরিযায়ীদের ফেরাতে পরিবহণের ব্যবস্থা করেছে সরকার। তিনি বলেন,”রাজ্যগুলোর সঙ্গে চুক্তি হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে যে প্রত্যেক পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ি ফেরার সুযোগ পাবে। কিন্তু সেসব কথায় কান না দিয়েই তাঁরা রাস্তা ধরে হাঁটা শুরু করেছেন। এখন তাঁদের আটকাতে যদি বল প্রয়োগ করা হয় তাহলে পাল্টা প্রতিক্রিয়া হতে পারে”,সুপ্রিম কোর্টও কড়া ভাষায় বলেছে: “রাজ্যগুলিকেই এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দিন। আদালত কেন এগুলো শুনবে বা সিদ্ধান্ত নেবে?” পাশাপাশি খবরের কাগজ পড়ে ওই আইনজীবী আদালতে মামলা করেছেন বলে তীব্র ভর্ৎসনা করে সর্বোচ্চ আদালত।

লকডাউনের কারণে বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়েন বহু পরিযায়ী শ্রমিক। হতাশায় তাঁরা নিজের বাড়ি ফেরার জন্যে রাস্তা দিয়ে বা রেললাইন দিয়েই হাঁটা শুরু করেন। অনেকে আবার কোনওরকমে অটো বা অন্য পরিবহণ জোগাড় করে গাদাগাদি অবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফেরার পথ বেছে নিয়েছেন। কেউ কেউ ফিরছেন সাইকেলেও। সেকারণে দুর্ঘটনাও ঘটছে। পশ্চিমবঙ্গের মত বিভিন্ন রাজ্য এর পুরো দায় কেন্দ্রের ওপর চাপাতে চাইলেও রাজ্য সরকার যে দায় এড়াতে পারেনা এদিন সর্বোচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণে তা প্রমাণিত হয় গেল বলে ওয়াকিবহাল মহলের অভিমত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *