নয়াদিল্লি: করোনা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ বাড়াতে শুরু করেছে দিল্লির নিজামুদ্দিন৷ দেশে মোট করোনা আক্রান্তের ২০ শতাংশই তবলিঘি জামাতের ডাকা ধর্মীয় সমাবেশে যোগ দেওয়া মানুষ বলে জানা গিয়েছে৷ ইতোমধ্যে বিভিন্ন রাজ্য থেকে ওই জমায়েতে যোগ দেওয়া ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর৷
সারা দেশে আক্রান্তের সংখ্যাটা আরও বাড়তে চলেছে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ নিজামুদ্দিনের মসজিদে আসা তবলিঘি জামাতের সদস্য ও তাঁদের সংস্পর্শে আসা প্রায় আট হাজার মানুষের করোনা টেস্ট করা হয়েছে৷ আশঙ্কা, এই রিপোর্ট হাতে এলে ভয়ঙ্কর ভাবে বদলে যেতে পারে গোটা দেশের আক্রান্তের পরিসংখ্যান৷
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই মুহূর্তে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ১,৯৫৬৷ যার মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৫১ জন এবং করোনার বলি ৫০৷ তবলিঘি জামাত প্রধান মৌলনা সাদ বৃহস্পতিবার দেশের প্রথম সারির এক সংবাদপত্রে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, গোপন জায়গায় কোয়ারান্টিনে রয়েছেন তিনি৷ এদিকে, গত বুধবার থেকে দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশ সহ ২৪টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে জামাত সদস্য ও তাঁদের সংস্পর্শে মানুষদের খোঁজে চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ৷
প্রশাসনের কাছে আসল চ্যালেঞ্জ এখন এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া সেই ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা, যাঁরা দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে গিয়েছেন। দিল্লি থেকে রওনা হওয়া পাঁচটি ট্রেনের তথ্য জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে। তবলিঘি জামাতে যোগ দিয়ে এই ট্রেনগুলিতে করে বাড়ি ফিরেছিলেন বহু মানুষ। পরে জানা যায়, তাঁদের অধিকাংশই করোনা আক্রান্ত। ১৩ থেকে ১৯ মার্চের মধ্যে চলা ওই পাঁচটি ট্রেনের তথ্য জোগাড়ের চেষ্টা চলছে৷ জানা গিয়েছে, প্রতিটি ট্রেনেই রেলকর্মী সহ ১০০০ থেকে ১২০০ জন যাত্রী ছিলেন। এঁদের মধ্যে কতজন নিজামউদ্দিন ফেরত আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসেছেন, তা স্পষ্ট নয়। তবু যাত্রী তালিকা ধরে খোঁজ চালাচ্ছে রেল। সেই তালিকা সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকেও পাঠানো হচ্ছে।
প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করেই মার্চের মাঝামাঝি নিজামুদ্দিনের একটি মসজিদে ধর্মীয় সমাবেশের ডাক দেয় তবলিঘি জামাত৷ ওই সমাবেশে যোগ দেন দেশ বিদেশের বহু মানুষ৷ লকডাউনের ফলে তাঁদের অনেকেই ফিরতে পারেননি৷ মঙ্গলবার থেকে টানা ৩৬ ঘণ্টা অপারেশন চালিয়ে নিজামুদ্দিনের মরকজ থেকে ২,১১৩ জনকে বার করে আনে দিল্লি পুলিশ৷ একটি ছ’তলা ডর্মেটরিতে গাদাগাদি করে ছিলেন তাঁরা৷ এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই নতুন করে ভারতে চোখ রাঙাতে শুরু করেছে করোনা৷