মুম্বই: সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুরহস্যের তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে তুলে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷ এরই মধ্যে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ যার ভিত্তিতে সন্দেহের তির ঘুরছে সুশন্তের বন্ধু তথা ফ্ল্যাট-মেট সিদ্ধার্থ পিঠানির দিকেই৷
আরও পড়ুন- ১০৫ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে ছেলেকে পরীক্ষা কেন্দ্র পৌঁছাল বাবা
জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন, অর্থাৎ ১৪ জুন সুশান্তের ঘরের দরজা খোলার জন্য যে চাবিওয়ালাকে ডেকে আনা হয়েছিল, তিনি লক খুললেও তাঁর সামনে ঘরের দরজা খোলা হয়নি৷ লক খোলার পরই তাঁর হাতে ২ হাজার টাকা ধরিয়ে তাঁকে সেখান থেকে চলে যেতে বলা হয়৷ চাবিওয়ালাকে গেট পর্যন্ত ছেড়ে আসা পরই সুশান্তের ঘরের দরজা খোলেন সিদ্ধার্থ৷ রফিক নামে ওই চাবিওয়ালার সঙ্গে যোগাযোগ করে এবিপি টিভি৷ তিনি এবিপি-কে জানান, সুশান্তের ঘরের লক খোলার পরই ২ হাজার টাকা দিয়ে চলে যেতে বলা হয়েছিল তাঁকে৷ তাঁর সামনে ঘর খোলেননি সিদ্ধার্থ৷
সিদ্ধার্থ আর সুশান্তের বাড়ির রক্ষীর কথার মধ্যেও অনেক অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে। রক্ষী জানিয়েছেন, সিদ্ধার্থ তাঁকে সে দিন সুশান্তের আত্মহত্যার ব্যাপারে কিছুই জানাননি। এছাড়াও আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, সুশান্তের দিদি মীতু যখন বান্দ্রায় এসে পৌঁছন, ততক্ষণে সুশান্তের দেহ নীচে নামানো হয়ে গিয়েছে। তিনি সুশান্তকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেননি৷ একমাত্র সিদ্ধার্থবাবুই দাবি করেছেন, তিনি দেখেছেন ।
আরও পড়ুন- ফেসবুক বিতর্ক শশী থারুরের বিরুদ্ধে নোটিশ বিজেপি সাংসদের
ইতিমধ্যে সুশান্তের প্রাক্তন ম্যানেজার অঙ্কিত আচার্য পরিচারকের দায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি কাউকে দোষারোপ করতে চাই না৷ কিন্তু ১৩ জুন এবং ১৪ জুন সকালে সুশান্ত কী অবস্থায় ছিলেন, তা খেয়াল রাখার দায়িত্ব বাড়ির পরিচারকের উপর বর্তায়৷’’
এছাড়াও বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছেন অঙ্কিত৷ তিনি বলেন, ‘‘সুশান্ত কী করছেন বা কেমন আছেন কেন তা দেখা হল না? কেনই বা সকালক ১০ টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত কেউ তাঁর কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলেন না? কেন তাঁর ঘরের দরজা ভাঙা হল না? এটা তাঁদেরই দায়িত্ব ছিল৷ চার-পাঁচজনে মিলে দরজা না ভেঙে কেন চাবিওয়ালাকে খবর দেওয়া হল? দরজা ভাঙা গেলে, হয়তো তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হত৷ এছাড়া তাঁরাই সুশান্তের দেহ নামিয়ে এনেছিল, যেটা ছিল পুলিশের ডিউটি৷ সুশান্তের দেহ নামিয়ে এনে সাক্ষ্যপ্রমাণ নষ্ট করেছেন তাঁরা৷’’
আরও পড়ুন- 'খুনের সম্ভাবনা প্রবল', সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ পারিবারিক আইনজীবীর
সিদ্ধার্থ পিঠানির ভূমিকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সুশান্তের বাবার আইনজীবী বিকাশ সিংও। তাঁর কথায়, সিদ্ধার্থ ‘সন্দেহজনক’ ও ‘খুব বুদ্ধিমান অপরাধী’। বিকাশ জানিয়েছেন, শুরুর দিকে সুশান্তের পরিবারকে সাহায্য করছিলেন সিদ্ধার্থ। কিন্তু রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে সুশান্তের বাবা কেকে সিং এফআইআর দায়ের করার পরেই সিদ্ধার্থর আচরণ বদলে যায়৷