নয়াদিল্লি: রাফাল ইস্যুতে ক্যাগ রিপোর্ট প্রকাশ হতেই কংগ্রেসকে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানালেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি৷ নিজের টুইটারে জেটলি রেখেন, ‘‘সত্যমেব জয়তে৷ সত্যের জয়ী হল আজ৷’’ এদিন টুইটারে কংগ্রেস ও বিজেপি জমানায় রাফালের দামের তুলনা টানেন জেটলি৷ ়
বলেন, ‘‘২০১৬ বনাম ২০০৭৷ নিম্ন দাম, দ্রুত ডেলিভারি, ভাল রক্ষণাবেক্ষণ৷’’ গান্ধী পরিবারকে নাম না করে জেটলির কটাক্ষ, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট ভুল, ক্যাগ ভুল৷ শুধুমাত্র রাজবংশের সদস্যরাই ঠিক৷ যাঁরা দেশকে ক্রমাগত মিথ্যা বলে চলেছে, তাঁদের কী কোনও শাস্তি হবে না? মহাজোটের মিথ্যা অভিযোগে আজ সিএজি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে৷’’
রাফাল ইস্যুতে ক্যাগ রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার পর ফের ঐক্যবদ্ধ ভাবে মোদি বিরোধী আন্দোলনে নামলেন কংগ্রেস, তৃণমূল সহ বিরোধীরা৷ এদিন রিপোর্ট পেশ হওয়ার পর ইউপিএ চেয়ারম্যান সোনিয়া গান্ধী মোদি সরকারকে ‘ধাপ্পাবাজি’র সরকার বলেও কটাক্ষ করেন৷ ক্যাগ রিপোর্ট সংসদে পেশ হওয়ার পর বিরোধীদের তরফে দফায় দফায় আলোচনার পর সংসদের বাইরে ধর্নায় অংশ নেন বিরোধী দলের সাংসদরা৷ ‘চৌকিদার চোর’ এই স্লোগান তুলে ধর্নায় সামিল হন তৃণমূল সাংসদরাও৷
It cannot be that the Supreme Court is wrong, the CAG is wrong and only the dynast is right.
— Arun Jaitley (@arunjaitley) February 13, 2019
বুধবার মোদি সরকারের শেষ অধিবেশনে অবশেষে সংসদে পেশ হল ক্যাগ রিপোর্ট৷ রিপোর্টে কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়লেও বড় জয় পেলেন প্রধানমন্ত্রী৷ বুধবার সংসদে ক্যাগ রিপোর্ট পেশ করে জানানো হয়, কংগ্রেসের সরকারের তুলনায় অন্তত ২.৮৬ শতাংশ কম দামে রাফাল যুদ্ধ বিমান কেনার চুক্তি করছে নরেন্দ্র মোদির সরকার৷ নয়া এই চুক্তির ফলে ১৭.০৮ শতাংশ টাকা বেঁচে গিয়েছে সরকারি কোষাগার থেকে৷ বেশি নয়, বরং সস্তায় এই চুক্তি হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে৷ মোট চুক্তির ৯ শতাংশ কম দামে রাফাল কেনা হয়েছে বলে এদিন সংসদে ক্যাপ রিপোর্ট পেশ করা হয়৷ তবে, রাফালের দাম কত? পারফর্মেন্স গ্যারান্টি কথা জানানো হয়নি৷
লোকসভা ভোটের আগে ৫৯,০০০ কোটি টাকার রাফাল চুক্তি ঘিরে সরগরম জাতীয় রাজনীতি। ২০১৬ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ২৬টি রাফাল যুদ্ধ বিমান ক্রয় নিয়ে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছিল ভারত ও ফ্রান্স। ৫৯,০০০ কোটি টাকার এই চুক্তি ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ইতোমধ্যে সরব হয়েছে বিরোধীরা। যদিও কেন্দ্র সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরেই রাফাল যুদ্ধ বিমান কেনা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। যার সাম্প্রতিকতম সংযোজন, ২০১৫ সালের প্রতিরক্ষা দফতরের নোট। সেই নোটে প্রধানমন্ত্রীর দফতরকে ‘প্যারালাল নেগোশিয়েশন’ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছিল। সেখানে আরও বলা হয়, প্রতিরক্ষা দফতরের কর্মকর্তাদের উপেক্ষা করেই আলোচনায় আখেরে ভারতেরই ক্ষতি হবে। যদিও প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও অসম্পূর্ণ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
যা নিয়ে শরিক শিবসেনাও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। শিবসেনার পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়, রাফাল চুক্তির মাধ্যমে তাহলে কার লাভ হচ্ছে? রুগ্ন শিল্পপতিদের না দেশের? সমস্ত বিতর্কের অবসান হতে পারে এই ক্যাগের রিপোর্ট প্রকাশিত হলেই। লোকসভা নির্বাচনের গতিপ্রকৃতি অনেকটাই ঠিক করে দিতে পারে এই রিপোর্ট। আপাতত, সেই রিপোর্টের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে গোটা দেশ৷