কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা করে পেগাসাস তদন্তে কমিটি গঠন সুপ্রিম কোর্টের

কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা করে পেগাসাস তদন্তে কমিটি গঠন সুপ্রিম কোর্টের

নয়াদিল্লি:  পেগাসাস কাণ্ডের তদন্তে কমিটি গঠল করল সুপ্রিম কোর্ট৷ ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করল শীর্ষ আদালত৷  অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আর রবীন্দ্রন ও দুই সাইবার বিশেষজ্ঞকে নিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে৷  সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতেই কাজ করবে এই কমিটি৷

আরও পড়ুন- মিসড কলেই বাজিমাত! দলকে চাঙ্গা করতে BPJ-র দাওয়াইয়ে ভরসা কংগ্রেসের

পেগাসাস কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্ট তদন্ত কমিটি গঠন করবে বলে ইঙ্গিত ছিল৷ সেই মতোই আজ ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেন প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ৷ ৮ সপ্তাহ পর শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে৷ এদিন রায় ঘোষণার সময় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামন বলেন, ‘কেন্দ্রকে জবাব দিতে যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়েছে। সময় দেওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্র কোনও জবাব দেয়নি।’ পাশাপাশি তিনি ব্যক্তি-গোপনীয়তার অধিকার রক্ষা গুরুত্বপূর্ণ নিয়েও মন্তব্য করেন৷ প্রধান বিচারপতি বলেন, শুধু সাংবাদিক নয়, প্রত্যেক নাগরিকের গোপনীয়তা রক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। বেশ কয়েকজন আবেদনকারীর ফোনে সরাসরি আড়ি পাতা হয়েছে৷ তাঁরা পেগাসাসের শিকার। এই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকাটা কেন্দ্রের গুরুদায়িত্ব৷ জর্জ অরওয়েলের উক্তি তুলে তাঁর মন্তব্য, ‘গোপন রাখতে চাইলে নিজেদের থেকেও গোপন রাখা উচিত’৷ 

কমিটি গঠনের আগে এদিন ব্যক্তি স্বাধীনতার কথাও বলেন ভারতের প্রধান বিচারপতি৷ তিনি বলেন, প্রতিটি নাগরিকের কাছে গোপনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ এই ভাবে নজরদারি চলেল বাক স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হবে৷ তিনি আরও বলেন, জঙ্গি হানা বা জাতীয় সুরক্ষার ক্ষেত্রে আড়ি পাতা যেতে পারে৷ তার জন্য যথাযথ নিয়ম রয়েছে৷ তা বলে যে কোনও ক্ষেত্রে জাতীয় সুরক্ষার কারণ দর্শিয়ে কেন্দ্র বা রাজ্য কোনও সরকারই যে কারও ফোন হ্যাক করতে পারে না৷ পাশাপাশি সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতে আজ আদালতের সামনে যে যুক্তিগুলি রেখেছিলেন তাতেও সন্তুষ্ট হয়নি সুপ্রিম কোর্ট৷ এদিন সলিসিটার জেনারেল আদালতকে জানান, কেন্দ্রীয় সরকার এই মামলার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করবে৷ কিন্তু তাঁর আবেদন নাকোচ করে দেন প্রধান বিচারপতি৷ বদলে সুপ্রিম কোর্ট নিজে কমিটি গঠন করে৷

প্রধান বিচারপতি এন ভি রামন এদিন তদন্ত কমিটি গঠনের রায় ঘোষণার সময় স্পষ্টভাবে জানান, এই মামলায় কেন্দ্রীয় সরকারের স্পষ্ট অবস্থান এখনও জানা যায়নি। আদালত মনে করছে ব্যক্তিগত পরিসরে আঁড়িপাতার মতো ঘটনায় তদন্ত হওয়া উচিত৷ কেন্দ্রীয় সরকারের অস্পষ্ট অবস্থানের কারণেই এই কমিটি গঠন৷ প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, “আমরা মনে করি, প্রযুক্তির ব্যবহার মানুষের  জীবনকে আরও সুন্দর করে তোলার জন্য। ব্যক্তিগত গোপনীয়তার উপর আক্রমণ অনুচিত। ’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − eleven =