নয়াদিল্লি: যত দিন যাচ্ছে, কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলনে ততই বেড়ে চলেছে জটিলতা। প্রথম দিকে এই আন্দোলন শান্তিপূর্ণ থাকলেও প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন দিল্লিতে ট্র্যাক্টর মিছিলকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া অশান্তিতে অন্নদাতা কৃষকদের প্রতিবাদে লাগে হিংসার রং। দেশ জুড়ে সমালোচনার মাঝে এবার আগামী কর্মসূচি নিয়ে কৃষক সংগঠনগুলির মধ্যেও দেখা দিচ্ছে মতানৈক্য।
সম্প্রতি গোটা দেশ জুড়ে নিজেদের দাবি আদায়ের উদ্দেশ্যে ‘চাক্কা জ্যাম’-এর ডাক দিয়েছিলেন কৃষক নেতারা। তবে এই কর্মসূচি নিয়ে এবার মতানৈক্য তৈরি হয়েছে দুই আন্দোলনকারী কৃষক সংগঠনের মধ্যে। উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডে গতকাল চাক্কা জ্যাম পালন না করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন (BKU) নেতা রাকেশ টিকাইত। এদিকে কিছুদিন আগে গোটা দেশ জুড়েই এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল সম্যুক্ত কিষান মোর্চা। রাকেশ টিকাইত এর পরিপ্রেক্ষিতে জানিয়েছিলেন “তাড়াহুড়ো করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে”, দুই রাজ্যে রাস্তা না আটকানোর সিদ্ধান্তও জানিয়ে দেন তিনি। দীর্ঘদিনের ঐক্যবদ্ধ কৃষক আন্দোলনে তবে কি চিড় ধরল? প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে।
এদিন প্রথম সারির কৃষক নেতা দর্শন পাল জানান, “টিকাইতের উচিত ছিল আগে সম্যুক্ত কিষান মোর্চার সঙ্গে পরামর্শ করে তাঁদের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা।” ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের চাক্কা জ্যাম না করার ঘোষিত সিদ্ধান্ত সম্যুক্ত কিষান মোর্চার অনেক নেতাদেরকেই যে হতবাক করে দিয়েছিল তাও স্পষ্ট হয়েছে নেতাদের কথা থেকে। কৃষক সংগঠনগুলির ঐক্যে যে ফাটল দেখা দিচ্ছে, এই ঘটনাই তা প্রমাণ করে।
এদিন সিংঘু বর্ডারে সংবাদমাধ্যমের কাছে সম্যুক্ত কিষান মোর্চার নেতা দর্শন পাল জানান, “মিডিয়ার কাছে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়ার আগে রাকেশ টিকাইতের উচিত ছিল আমাদের সঙ্গে কথা বলা।” অবশ্য পরে তাঁদের সঙ্গে ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন যোগাযোগ করেছে, এবং একসঙ্গেই কর্মসূচি পালিত হয়েছে বলে জানান দর্শন পাল। কৃষক আন্দোলনে যে আদৌ কোনো মতানৈক্য নেই, তা নিশ্চিত করতে তিনি আরো বলেন, “অর্থাৎ আমরা বলতে চাইছি, মিডিয়ার কাছে ও (রাকেশ টিকাইত) তাড়াহুড়ো করে ঘোষণা করে দিয়েছিল।” উল্লেখ্য, শনিবার দেশ জুড়ে কৃষকরা ৩ ঘন্টাব্যাপী চাক্কা জ্যাম কর্মসূচি পালন করেন। এ ব্যাপারে প্রশাসনের তরফ থেকে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।