উত্তরাখন্ড: বছর দশেক আগে এক বলিউডি ছবিতে অনিল কাপুরকে দেখা গিয়েছিল এক দিনের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসতে। সিনেমা হলে হাতে পপকর্ন নিয়ে বসে রূপোলী পর্দায় সেই আপাত অবাস্তব কাহিনীর প্রেক্ষাপট যতই উপভোগ্য মনে হোক, বাস্তবে এক দিনের মুখ্যমন্ত্রী যে কষ্টকল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়, তা সকলেরই জানা ছিল। কিন্তু সত্যিই কি তাই?
বস্তুত, উত্তরাখন্ডের রাজ্য প্রশাসনের সাম্প্রতিক এক সিদ্ধান্ত যেন বলিউডি সমীকরণকে নিয়ে এসেছে বাস্তবের মাটিতেও। সত্যি সত্যিই ২৪ ঘন্টার জন্য নিয়োগ করা হল এক ‘মুখ্যমন্ত্রী’। ২৪ জানুয়ারি একদিনের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে উত্তরাখণ্ড রাজ্যের সমস্ত প্রশাসনিক দায়িত্ব তথা সরকারি প্রকল্পের দেখাশোনা করলেন সৃষ্টি গোস্বামী নামের তরুণী৷ এক্ষেত্রে অবশ্য রূপোলী পর্দার মতো কোনো নাটকীয় ঘটনা বিন্যাস নেই। ‘জাতীয় বালিকা দিবস’ পালনের উদ্দেশ্যেই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই অভিনব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সূত্রের খবর, সৃষ্টি গোস্বামী নামের বছর উনিশের ওই বালিকা উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারের বাসিন্দা। তিনি বিএসসি ডিগ্রির তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। ২৪ ঘন্টার জন্য উওরাখণ্ডের রাজধানী গেইরসন থেকে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর গুরুদায়িত্ব সামলালেন আজ গোটা দিন। এমনকি রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের পর্যালোচনাও করেন তিনি। আচমকা এই দায়িত্ব পেয়ে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত সৃষ্টি। আর সে উচ্ছ্বাস চাপা থাকে না সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েও। তিনি বলেন, “আমি অভিভূত। এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না যে এটা সত্যি। তবে একইসঙ্গে আমি কথা দিচ্ছি, প্রশাসনিক কাজে যুব সমাজও দক্ষ হতে পারেন, তা প্রমাণ করার যথাসাধ্য চেষ্টা করব।”
উত্তরাখণ্ডের ঠিক কোন কোন সরকারি প্রকল্পের পর্যালোচনা করবেন সৃষ্টি? জানা গেছে তালিকাটা নেহাত ছোটো নয়। ‘অটল আয়ুষ্মান প্রকল্প’, ‘স্মার্ট সিটি প্রকল্প’, ‘পর্যটন বিভাগের হোমস্টে প্রকল্প’ এবং অন্যান্য উন্নয়ন বিষয়ক একাধিক প্রকল্পের কাজ সামলাল তিনি। সৃষ্টি গোস্বামীকে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসানোর আগে তাঁকে প্রশাসনিক কাজে কিছু প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে উত্তরাখণ্ড সংবাদমাধ্যম সূত্রে। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কাজ শুরু করার আগে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন বিভাগের আধিকারিকরা তাকে বিশদে উপস্থাপনা করা হয়৷ ২০১৮ সাল থেকেই রাজ্যের শিশু বিধানসভার অধ্যক্ষ পদে রয়েছেন সৃষ্টি গোস্বামী।