নয়াদিল্লি: চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে শুরু হওয়া করোনাভাইরাস টিকাকরণ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে একাধিকবার আক্রমণ করেছে বিরোধীরা। কারণ তারা দাবি করেছে যে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন নেই দেশে, সেই কারণে টিকাকরণ কর্মসূচি সফল হচ্ছে না। এদিকে তা নিয়ে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নেই কেন্দ্রীয় সরকারের। এবার কার্যত একই অভিযোগ তুলল সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া। বরং তাদের তরফ থেকে আরও বিস্ফোরক তথ্য জানানো হল যে, করোনাভাইরাস টিকার যে অভাব রয়েছে তা জানতো মোদী সরকার। এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন সংস্থার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সুরেশ যাদব।
সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার এই কর্তার বক্তব্য, কত পরিমাণ করোনাভাইরাস টিকা আছে সে বিষয়টা ভালোভাবে না জেনেই একাধিক শ্রেণীর মধ্যে টিকাকরণ শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এমনকি পালন করা হয়নি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা। তিনি স্পষ্ট জানাচ্ছেন, ৩০ কোটি মানুষের টিকাকরণ করার জন্য ৬০ কোটি ভ্যাকসিন দরকার। কিন্তু পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন না থাকার আগেই ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বের মানুষদের জন্য টিকাকরণ শুরু করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। এরপর বেশীদিন যেতে না যেতেই ১৮ বছরের উর্ধ্বে মানুষের জন্য টিকাকরণের ঘোষণা করে তারা। স্বাভাবিকভাবেই এই কারণেই টিকাকরণ নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে দেশে বলে দাবি করা হয়েছে। সেরাম কর্তার দাবি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা মেনে চলা উচিত ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের তাহলে হয়তো এই সমস্যা হত না। কিন্তু একদিকে যেমন সেই নির্দেশিকা পালন করা হয়নি, অন্যদিকে সঠিক পরিকল্পনার অভাব ছিল তাদের মধ্যে। এতদিন ধরে এই একই অভিযোগ তুলে আসছিল বিরোধীরা। এবার কার্যত তাদের অভিযোগের সীলমোহর পড়ল সেরাম সংস্থার এই কর্তার মন্তব্যে।
করোনাভাইরাস দ্বিতীয় ঢেউয়ে এখন কার্যত বিপর্যস্ত ভারত। দৈনিক সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। এর পাশাপাশি রয়েছে ভ্যাকসিন এবং অক্সিজেনের অভাব। বেশ কয়েকটি রাজ্যে পর্যাপ্ত ওষুধের অভাবও দেখা দিয়েছে ইতিমধ্যেই। সব মিলিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনার যে স্পষ্ট অভাব রয়েছে তা বলাই বাহুল্য। এখন কার্যত এই ব্যাপারটি কাঁচের মতো পরিষ্কার হয়ে গেছে।