কানপুর: মহাভারতে দ্রৌপদীর পাঁচটি স্বামী ছিল। তবে সেটা একসঙ্গে পাঁচজন স্বামীর সঙ্গে থাকতেন তিনি স্বেচ্ছায়। সম্প্রতি এই কলি যুগেও একজনের পাঁচটি স্ত্রী থাকার খবর সামনে এসেছে৷ আগের বউয়ের থেকে ডিভোর্স না নিয়েই একটির পর একটি বিয়ে করেছেন এই ব্যক্তি৷ পাঁচটি বিয়ের পরে ষষ্ঠ বিয়ের পরিকল্পনাও পাকা হয়ে গিয়ে ছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি৷ পুলিশের জালে ধরা পড়ে যান কানপুরের অনুজ চেতন কাঠারিয়া নামে এক স্বঘোষিত ‘বাবা’। নেট দুনিয়ায় এই গুণধর লাকি পাণ্ডে নামে পরিচয়৷ এমনকি গ্রেফতারের সময়ও এই নামেই সেই মুহূর্তে ৩২ জন মহিলার সঙ্গে কথা চালাচ্ছিলেন ‘বাবা’।
জানা গিয়েছে, তাঁর এক স্ত্রীর জন্য ধরা পড়েন এই কীর্তিমান। কানপুরের ডিসিপি রবিনা ত্যাগী জানিয়েছেন, ওই মহিলা অভিযোগ করেন অনুজ পাঁচজনকে বিয়ে করে এবার ষষ্ঠবার ছাদনাতলায় বসতে চলেছেন৷ এরপরই শুক্রবার পুলিশের জালে ধরা পড়ে যান৷ অনুজকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই তাঁর কীর্তিকলাপের তথ্য জানতেই চোখ কপালে ওঠে পুলিশের। জানা গিয়েছে, ২০০৫ সালে প্রথমবার বিয়ে করেন অনুজ। এখনও সেই ডিভোর্সের মামলা চলছে আদালতে। ২০১০ সালে দ্বিতীয় বিয়েতেও ডিভোর্সের মামলা ঝুলে আছে৷ এরপর তৃতীয়বার গাঁটছড়া বাঁধেন এবং তৃতীয় স্ত্রীর এক বোনের সঙ্গেও সাত পাক ঘোরেন৷ সেই মহিলা অবশ্য অনুজের আসল পরিচয় জেনেই আত্মহত্যা করেন৷ চেতনের অবশ্য তাতে কোনও চেতনা ফেরেনি৷ ২০১৯ সালে ফের বিয়ের পিঁড়িতে বসেন তিনি, যা তাঁর কাল হয়ে দাঁড়ায়৷ কারণ এই স্ত্রীই শেষ পর্যন্ত পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন৷ শুধু একের পর এক বিয়েই নয়, তাঁর পঞ্চম স্ত্রীর আরও অভিযোগ করেছেন, তাঁর ওপর দিনরাত শারীরিক ও মানসিক অচ্যাচার করতেন চেতন।
এখানেই চেতনের অপরাধের ক্লাইম্যাক্স নয়৷ ২০১৬ সালে শাহজাহানপুরে তাঁর ভাইয়ের স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠায় তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়। এমনকি লাকি পাণ্ডে নামেও বিয়ের ওয়েবসাইটগুলিতে নাম ভাঁড়িয়ে তিনি ফাঁদ পাততেন বলে অভিযোগ৷ সেখানে তাঁর অনেক পরিচয়, কোথাও সরকারি স্কুলের শিক্ষক, কোথাও বা তান্ত্রিক, পুরোহিত, স্বঘোষিত ধর্মগুরু৷ একটি আশ্রম খুলে, তাতে ‘তন্ত্র-মন্ত্রের’ সাহায্যে জীবনের সমস্যা সমাধান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েও লোক ঠকাতেন বলে অভিযোগ৷ এই আশ্রমে এনে অনেক মহিলাকে যৌন নিগ্রহ করেছেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ ও ৩৪ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।