করোনা পরীক্ষার চার্জ ঠিক করুক কেন্দ্র, কেন্দ্রকে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

করোনা পরীক্ষার চার্জ ঠিক করুক কেন্দ্র, কেন্দ্রকে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

21d23997312f03389ad72428eeaa660f

 

নয়াদিল্লি: করোনা চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে ফের সরব হল দেশের শীর্ষ আদালত৷ কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তুলে করোনা চিকিৎসাব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷ করোনা চিকিৎসায় খরচ ও পরীক্ষা সংক্রান্ত চার্জ নির্ধারণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷

করোনা চিকিৎসা নিয়ে ফের একবার সরব হল দেশের শীর্ষ আদালত৷ মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনে হাসপাতালে সিসিটিভি লাগানো হোক প্রতিটি ওয়ার্ডে৷ প্রতিটি রাজ্যে করোনা চিকিৎসার ব্যয় হোক সমান৷ করোনা পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট চার্জ নির্ধারণ করুক কেন্দ্র৷ রাজ্য সরকার চাইলে কেন্দ্রের দেওয়া নির্ধারিত মূল্য কমিয়ে দিতে পারে৷ করোনা চিকিৎসার জন্য ভর্তি ও হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়ার নীতি হোক অভিন্ন৷ করোনা চিকিৎসার পরিকাঠামো বিবেচনা করার জন্য প্রতিটি হাসপাতাল পরিদর্শন করুক বিশেষ পর্যবেক্ষক দল৷ তাতে কোথায় কী সমস্যা হচ্ছে, তা জানা সম্ভব হয়৷ দ্রুত সেই সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেছে দেশের শীর্ষ আদালত৷

করোনা চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে এর আগেও একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশের শীর্ষ আদালত৷ গোটা দেশজুড়ে কীভাবে করোনা রোগীদের চিকিৎসা হচ্ছে, তা নিয়ে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানি হয়৷ সেখানে কেন্দ্রকে বেশকিছু নির্দেশ দিয়েছেন শীর্ষ আদালত৷

অন্যদিকে, বাংলায় করোনা চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে ইতিমধ্যে বেসরকারি নার্সিং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা৷ তবে সেখানে মৌখিকভাবে বেশকিছু নির্দেশ দেওয়া হলেও৷ মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা বৃহস্পতিবার নবান্নে করোনা চিকিৎসা নিয়ে নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে শহরের সব হাসপাতাল ও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন৷ বৈঠকের পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সরকারি হাসপাতালে শূন্য বেডের সংখ্যা স্বাস্থ্য দপ্তরের ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়া হবে৷ বেসরকারি হাসপাতালে কত শয্যা শূন্য রয়েছে সে সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য আজ থেকে রাজ্যের মানুষ ওয়েবসাইট থেকে পারবেন৷

এছাড়াও শয্যা সংক্রান্ত তথ্য প্রতিটি হাসপাতালের বাইরে বিজ্ঞাপিত করার পরিকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন৷ পাশাপাশি ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট আইনের কথা উল্লেখ করে বেসরকারি হাসপাতালকে কোনও অবস্থাতেই রোগী প্রত্যাখ্যান করতে নিষেধ করা হয়েছে৷ তবে শুধু সরকারের মুখের কথায় কতটা কাজের কাজ হবে তা নিয়ে প্রশাসনিক মহলের একাংশ সন্দিহান! কারণ মুখ্যসচিব নিজে জানিয়েছেন, আইন প্রয়োগ করে কাউকে কোন কিছুর জন্য বাধ্য করা রাজ্য সরকাররে নীতি নয়৷ তবে পরিস্থিতির ওপর সরকার নজর রাখবে৷ কাজেই রোগী হয়রানীর বিষয়টি এখনও শুধুমাত্র বেসরকারি হাসপাতাল কতৃপক্ষের মৌখিক প্রতিশ্রুতি আর সদিচ্ছার ওপরে ছেড় দেওয়া হল বলে পর্যবেক্ষক মহলের অভিমত৷

করোনা আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করতে গিয়ে চুড়ান্ত হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছেন রোগীর পরিজনেরা৷ বেড খালি থাকলেও হাসপতাল থেকে বেড খালি নেই বলে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ৷ হন্যে হয়ে রোগী নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছুটে বেড়াতে হচ্ছে তাঁদের৷ একই সঙ্গে করোনা পরীক্ষার নামে কোথায় দু’হাজার, কোথায় ৫ হাজার টাকা চার্জ করা হচ্ছে৷ করোনা চিকিৎসায় বেসরকারি ক্ষেত্রে লক্ষ লক্ষ টাকা বিল ধরানো হচ্ছে রোগীর পরিবারকে৷ নির্দিষ্ট মূল্য না থাকায় সমস্যায় পড়ছেন দেশের সাধারণ জনতা৷ আর এই সমস্যা থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *