লকডাউনে স্যানিটারি প্যাডের সংকট, ১৪ হাজার মহিলার পাশে দাঁড়ালেন এই তরুণী

লকডাউনে স্যানিটারি প্যাডের সংকট, ১৪ হাজার মহিলার পাশে দাঁড়ালেন এই তরুণী

মুম্বই: গত তিন মাস ধরে এক অনন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি৷ নিজের দলবল নিয়ে  মুম্বইয়ের বস্তি এলাকায় বসবাসকারী মহিলাদের কাছে পৌঁছনোর এক অদম্য লড়াই করে চলেছেন বছর ২৬ এর এই তরুণী৷ বাণিজ্যনগরীর গরিব এলাকায় বসবাসকারী মহিলাদের হাতে স্যানিটারি প্যাড তুলে দিতেই তাঁর এই সংগ্রাম৷ 

২০১৯ সালে ফোর্বস ‘৩০ আন্ডার ৩০’-এর এশিয়া তালিকায় জায়গা করে নিয়েছিলেন ডিন দ্য মেনেজেস৷ গত তিন মাস ধরে মুম্বইয়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ১৪ হাজার মহিলার হাতে ২,৪০,০০০ স্যানিটারি ন্যাপকিন তুলে দিয়েছেন তিনি৷ ‘রেড ইজ দা নিউ গ্রিন’ (আরআইএনজি)-এর স্রষ্টা দ্য মেনেজেস বলেন, ‘‘কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে লকডাউনে গরিব মানুষগুলো কর্মহীন হয়ে পড়েছে৷ বন্ধ উপার্জন৷ অধিকাংশ গরিব মেয়ে, বউ বা পরিযায়ী মহিলা শ্রমিকদের স্যানিটারি ন্যাপকিন কেনার ক্ষমতাটুকুও নেই৷ ঋতুস্রাবের সময় স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার না করা এক কলঙ্কিত অধ্যায় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ যা চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকরও বটে৷ এই সমস্যা দূর করাটাই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ৷’’ 

ডিন দ্য মেনেজেস বলেন, ‘‘লকডাউনের সময় স্থানীয় ওষুধের দোকান থেকে স্যানিটারি প্যাড কিনতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল আমাকে৷ তখনই আমার মনে হয়, ‘‘এত সুবিধা থাকা সত্ত্বেও স্যানিটারি প্যাড পেতে যদি আমার অতটা সমস্যা হয়, তাহলে সুবিধা বঞ্চিত মহিলারা কী ভাবে তা পাবেন?’’ তার উপর স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় মেয়ারাও বিনামূল্যে স্যানিটারি প্যাড সংগ্রহ করতে পারবে না৷ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে বিনা পয়সায় স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের স্যানিটারি প্যাড দেওয়া হয়ে থাকে৷

এই সমস্যা সমাধান করতেই মাঠে নেমে পড়েন দ্য মেনেজেস৷ তৃণমূল স্তরে গিয়ে তিনি মহিলাদের কাছে পৌঁছে দেন স্যানিটারি প্যাড৷ এই কাজে তাঁর সঙ্গ দেন আরআইএনজি-র কর্মী, এনজিও-র পার্টনার, ইউনিসেফ এবং বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপল কর্পোরেশন৷ সরকারি প্রকল্প ‘অস্মিতা যোজনা’-র অধীনে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কাছ থেকে এই স্যানিটারি প্যাড কেনেন দ্য মেনেজস৷ এই স্যানিটারি প্যাড তৈরি করেই চলে তাঁদের রুজিরুটি৷ 

মুম্বইয়ের এক স্কুল ছাত্রী কিরণ বলেন, ‘‘স্কুল থেকে পাওয়া স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করতেই আমরা অভ্যস্ত৷ কিন্তু এই অতিমারির জেরে আমরা এখন ঘরে বন্দি৷ শুধু বাড়ির পুরুষরাই বাইরে বেরচ্ছেন৷ তাঁদের প্যাড নিয়ে আসতে বলতে দ্বিধা হচ্ছিল৷ কিন্তু আমাদের মাঝে এসে প্যাড বিতরণ করায় আমরা সত্যিই উপকৃত৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *