শচীনের প্রেম-পর্বেও আছে রোমাঞ্চে ভরা, চ্যালঞ্জ নিয়ে বেঁধেছিলেন গাঁটছড়া

শচীনের প্রেম-পর্বেও আছে রোমাঞ্চে ভরা, চ্যালঞ্জ নিয়ে বেঁধেছিলেন গাঁটছড়া

জয়পুর: রাজনীতির আঙিনায় সবচেয়ে বেশি চর্চায় এখন মরুরাজ্যের রাজনীতি৷ যাঁর কেন্দ্র বিন্দুতে রয়েছেন রাজস্থানের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলট৷ তাঁর রাজনৈতিক জীবনের উপর দিয়ে বয়ে চলেছে এক ঝড়৷ চলছে টানাপোড়েন৷ প্রথম জীবনে শচীনের প্রেম কাহিনীতেও ছিল এমনই টানটান উত্তেজনা৷ যা সেলুলয়েডের চিত্রনাট্যকেও হার মানায়৷ শচীনের জীবনে যেমন ভরপুর রোমান্স এসেছে৷ তেমনই এসেছে বহু বাধা৷ যেন দক্ষ কলমের ছোঁয়ায় ফুটে ওঠেছে তাঁর লাভ লাইফ৷ যার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত নাটকীয়তায় মোড়া৷ 

ভারতীয় রাজনীতির এই সুদর্শন রাজনীতিকের প্রেম পর্ব শুরু হয়েছিল বিদেশের পটভূমিতে৷ সেই সময় এমবিএ কোর্স করতে লন্ডনে পাড়ি দিয়েছিলেন শচীন৷ দিল্লির এয়ার ফোর্স বাল ভারতী স্কুলের পাঠ শেষ করে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট স্টিফেনস কলেজ থেকে স্নাতক হন শচীন। এরপর এমবিএ করতে পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। সেখানেই তাঁর সঙ্গে দেখা হয় জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহর কন্যা ও ওমর আবদুল্লাহর ছোট বোন সারা আবদুল্লাহর সঙ্গে৷ একে অপরের সান্নিধ্যে আসেন তাঁরা৷ ধীরে ধীরে বন্ধুত্বের সম্পর্ক বদলে যায় ভালোবাসায়৷ 

এমবিএ কোর্স শেষ করার পর শচীন দেশে ফিরে এলেও লন্ডনেই থেকে যান সারা৷ তবে এই দূরত্ব তাঁদের ভালোবাসার পথে বাধা হতে পারেনি৷ বরং আরও গভীর হয়েছে তাঁদের সম্পর্ক৷ ই-মেল, ফোনের মাধ্যমেই চুটিয়ে প্রেম করে গিয়েছেন দুই লাভ বার্ডস৷ এভাবে প্রায় ৩ বছর কেটে যায়৷ নিজেদের সম্পর্ককে পরিণতি দিতে পরিবারকে বিষয়টি জানানোর সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা৷ এর ঠিক পর থেকেই শুরু হয় নতুন সিকোয়েন্স৷ তাঁদের সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ধর্ম৷ বেকে বসে দুই পরিবার৷ 

জানা যায়, সারা বহুবার তাঁর বাবা ফারুক আবদুল্লাহকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন৷ কিন্তু তিনি রাজি হননি৷  সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, এই বিয়েতে মত নেই তাঁর৷ এই সম্পর্ককে কেন্দ্র করে শুরু হয় দেশের দুই নামজাদা রাজনৈতিক পরিবারের দ্বন্দ্ব৷ কিন্তু একে অপরের হাত ছাড়েননি শচীন এবং সারা৷

পরিবারের সম্মতি না মেলায় কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয় তাঁদের৷ ঠিক করেন পরিবারের অমতেই বিয়ে করবেন৷ ২০০৪ সালে সারার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন শচীন৷ এই বিয়েতে সারার পরিবারের কেউ উপস্থিত ছিলেন না৷ তবে শেষ পর্যন্ত পাশে দাঁড়িয়েছিল শচীনের পরিবার৷ এক সাদামাটা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়েই ছেলের বিয়ে দেন শচীনের মা তথা কংগ্রেস নেত্রী রমা পাইলট৷ ২০ টি ক্যানিং লেনের সরকারি বাসভবনে বসে তাঁদের বিয়ের আসর৷ 

শোনা যায় সারার বিয়ের সময় লন্ডনে ছিলেন ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রধান ফারুক আবদুল্লাহ৷ আর সারার দাদা ওমর আবদুল্লাহ সেই সময় এক পরিচিতর চিকিৎসা করাতে ব্যস্ত ছিলেন৷ শচীন আর সারার বিয়ের পর বেশ কয়েক বছর তিক্ত ছিল দুই পরিবারের সম্পর্ক৷ তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যায়৷

মেয়ে-জামাইকে মেনে নেয় আবদুল্লাহ পরিবার৷ শচীন এখন ব্যস্ত রাজনীতিবিদ৷ আর নিজের এনজিও নিয়ে ব্যস্ত সারা৷ তাঁদের দুই পুত্র সন্তান রয়েছে৷ অরণ ও বিহান৷ দুই ছেলেকে নিয়ে সুখের সংসার তাঁদের৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − 4 =