বিজেপি কিংবা কংগ্রেস, রাজনীতির স্পষ্ট বক্তা ঋষি কাপুর ছিলেন শাঁখের করাত

বিজেপি কিংবা কংগ্রেস, রাজনীতির স্পষ্ট বক্তা ঋষি কাপুর ছিলেন শাঁখের করাত

মৌমিতা বিশ্বাস: ঋষি কাপুরের কথা উঠলেই ভেসে ওঠে ববি, মেরা নাম জোকার, কাপুর অ্যান্ড সনস, চান্দনি, দিওয়ানার মতো সিনেমার নাম৷ অমিতাভ বচ্চন, বিনোদ খান্নার অ্যাংরি ইয়ং ম্যানের যুগেও ব্যতিক্রমী ছিলেন ঋষি কপূর। দীর্ঘ অভিনয় জীবনে অসামান্য অবদান রেখে গিয়েছেন তিনি৷ কাপুর পরিবারের ঐতিহ্য আর পরম্পরাকে নিজের অভিনয় দক্ষতায় অন্য এক শিখরে নিয়ে গিয়েছিলেন ঋষি কাপুর৷ তবে অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতির কড়া সমালোচকও ছিলেন তিনি৷ বিভিন্ন সময় সরকার হোক বা বিরোধী কংগ্রেস, আক্রমণ শানিয়েছেন বারবার৷

একাধিকবার তিনি আক্রমণ শানিয়েছিলেন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে৷ তাঁর তোপের মুখে পড়েছিলেন রাহুল গান্ধীও৷ বংশপরম্পরার রাজনীতিতে নিয়ে কংগ্রেসকে বিঁধতে ছাড়েননি তিনি৷ রাহুল গান্ধীর একটি কথার পরিপ্রেক্ষিতে একের পর এক ট্যুইট করে তিনি বলেছিলেন, ‘‘প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে কাপুর পরিবার মানুষের সম্মান অর্জন করে এসেছে৷ ভারতীয় চলচ্চিত্রের ১০৬ বছরের ইতিহাসে ৯০ বছর দিয়েছে কাপুর পরিবার৷ প্রতিটি জেনারেশকে মানুষ স্বীকার করেছে তাঁদের দক্ষতায়৷ জরবদস্তি বা গুন্ডামী করে মানুষের সম্মান আদায় করা যায় না৷’’

গান্ধী পরিবারের নামে রাস্তা, বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের নামকরণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন ঋষি কাপুর৷ তাঁর যুক্তি ছিল, প্রতিটি প্রজন্মে সমাজের প্রতি যাঁদের অবদান রয়েছে, তাঁদের নামেই নামকরণ করা উচিত৷ কেন দিলীপ কুমার, দেব আনন্দ, অশোক কুমার, অমিতাভ বচ্চনের মতো ব্যক্তিত্বদের নামে রাস্তাঘাট কিংবা রেল স্টেশনের নামকরণ হবে না, সেই প্রশ্নও তুলেছিলেন তিনি৷  ‘ববি’র রাজ নাথ একবার বলেছিলেন, ‘‘রাজ কাপুর সারা দেশকে গর্বিত করেছিলেন৷ এমনকী মৃত্যুর পরেও৷ নিশ্চিতভাবেই তা রাজনীতির চেয়ে অনেক বেশি৷’’

বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ ছিল তাঁর৷ তিনি মনে করতেন, শিল্পী মহলের প্রতি সরকার খুবই উদাসীন৷ বিদেশে একজন শিল্পীকে যতটা সম্মান দেওয়া হয়, আমাদের দেশে সেই মর্যাদা পান না অভিনেতারা৷ আক্ষেপের সুরেই ঋষি কাপুর বলেছিলেন, ‘‘যখন ভাবি শিল্পীদের প্রতি সরকার কেমন আচরণ করছে, তখন আমি সত্যিই হতাশ হয়ে যাই৷ সারা বিশ্বে আমরা সিনেমা, সঙ্গীত এবং সংস্কৃতির জন্য পরিচিত৷ আমাদের দেশের আইনকনদের সরকার কি সেই স্বীকৃতি দিচ্ছে? যাবতীয় সড়ক, ফ্লাইওভার, বিমানবন্দরের নাম হচ্ছে রাজনৈতিক নেতাদের নামে৷ কেন তা অভিনেতাদের নামে নয়?’’