নয়াদিল্লি: দীর্ঘ লকডাউনে থমকে গণপরিবহন৷ কাজ হারিয়ে দীর্ঘ পথ হেঁটে বাড়ি ফিরছেন দেশের লক্ষ লক্ষ মেহনতি পরিযায়ী শ্রমিক৷ এই নিয়ে গোটা বিশ্বজুড়ে ওঠা বিতর্ক, লজ্জা ঢাকতে শ্রেমিকদের ফেরাতে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে রেল৷ কিন্তু সেই বিশেষ ট্রেনে চরম অব্যবস্থাপনার অভিযোগও উঠেছে৷ একের পর এক শ্রমিকের মৃত্যু হচ্ছে, ট্রেন সফরের মধ্যেই৷ আর এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতি এড়াতে জটিল রোগগ্রস্থ শ্রমিকদের এবার ট্রেন সফরে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে ভারতীয় রেল মন্ত্রক৷ তবে, তাতেও রক্ষা হয়নি৷ বিশেষ ট্রেনে চরম অব্যবস্থাপনার অভিযোগে রেলের বিরুদ্ধে মানবাধিকার ভঙ্গের নোটিস ধরিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন৷
শ্রমিক স্পেশালে একাধিক শ্রমিকের মৃত্যুর মতো অপ্রত্যাশিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই বিতর্কে জড়িয়েছে রেলমন্ত্রক৷ আর এই পরিস্থিতির কারণ জানতে চেয়ে রেল মন্ত্রকের জবাব চেয়ে পাঠিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন৷ মানবাধিকার কমিশনের নোটিসের পর জরুরি ভিত্তিতে একটি নির্দেশিকা দিয়েছে রেল৷ তাতে জটিল রোগ থাকলে শ্রমিকদের ট্রেনযাত্রায় নিষেধ করা হয়েছে৷
নির্দেশিকায় সাফ জানানো হয়েছে, যেসব পরিশ্রমীদের হাই ব্লাড প্রেশার, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ রয়েছে, কিংবা ক্যান্সার আক্রান্ত, তাঁদের ট্রেনের সফর না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷ নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, অন্তঃসত্ত্বা মহিলার, ১০ বছরের কম বয়সী শিশু ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সীরা একান্ত প্রয়োজন ছাড়া রেল যাত্রা এড়িয়ে চলেন৷ তবে ওই নির্দেশিকায় বলা হয়নি, যাঁদের হাই ব্লাড প্রেশার রয়েছে বা ডায়াবেটিস রয়েছে, সেই সমস্ত শ্রমিকরা কীভাবে বাড়ি ফিরবেন? তাঁদের জন্য পৃথক কোনও ব্যবস্থা করা হবে? জবাব অধরা৷
অন্যদিকে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় বিহার ও গুজরাট সরকারকে নোটিশ পাঠাল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন৷ সেইসঙ্গে নোটিশ পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সচিব ও রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানকে৷ জানানো হয়েছে, প্রচণ্ড গরমে খাবার ও জলের অভাব রয়েছে বিশেষ ট্রেনে৷ আর এই পরিস্থিতিতে দীর্ঘ যাত্রার সামলাতে না পেরে একাধিক শ্রমিকের মৃত্যু হচ্ছে৷ গত কয়েকদিন ধরে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হওয়া খবরের ভিত্তিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন নোটিশ পাঠিয়েছে বলে সূত্রের খবর৷
মানবাধিকার কমিশন সূত্রে খবর, গুজরাটের সুরাট থেকে বিহার পর্যন্ত শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন পৌঁছতে সময় লেগেছে ন’দিন৷ এই সমস্ত খবর সত্যি হলে গুরুতর মানবাধিকার ভঙ্গের সামিল বলেও দাবি করা হয়েছে৷ কমিশনের তরফে এই প্রেক্ষিতে রেলকে নোটিশ পাঠিয়েছে কমিশন৷ আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে৷