নয়াদিল্লি: গোটা দেশে করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতিতে সবচেয়ে উদ্বেগজনক স্থান হয়ে দাঁড়িয়েছেন এই নিজামুদ্দিন। টানা ৩৬ ঘণ্টা অপারেশনে বুধবার ২৩০০’এর বেশি মানুষকে বের করে আনল দিল্লি পুলিশ। এদের মধ্যে ছ’শোরও বেশি মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য। বাকিদের পাঠানো হল কোয়ারেন্টাইনে। দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ শিসোদিয়া সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন।
এই ধর্মসভায় যাঁরা অংশ নিয়েছিলেন তাঁরা শহরের ১৬টি মসজিদে ছিলেন। এঁদের মধ্যে কেউ এদেশের বাসিন্দা। আবার বিদেশ থেকে এসেও যোগ দিয়েছিলেন অনেকে। তাই দিল্লি পুলিশ স্পেশাল ব্রাঞ্চ মঙ্গলবার দিল্লির সরকারকে এই বিষয় তত্পনর হয়ে পদক্ষেপ করার জন্য আবেদন করেছে। এই সরকারি পত্রে লেখা রয়েছে, ওই ধর্মসভায় উপস্থিতদের মধ্যে ৯৪জন ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার, ১৩ জন কিরগিস্তান থেকে, ৯ জন বাংলাদেশ থেকে, ৮ জন মালয়েশিয়ার, ৭ জন আলজেরিয়ার। এছাড়া তিউনিসিয়া, বেলজিয়াম ও ইটালি থেকে ১ জন করে এসেছিলেন। আর বাকিরা ছিলেন ভারতীয়। দিল্লির মসজিদের জমায়েতই এখনও হয়ে উঠেছে করোনা সংক্রমণের হট স্পট।
মধ্য মার্চে দেশ-বিদেশ থেকে ইসলাম সম্প্রদায়ের মানুষজন গিয়েছিলেন দিল্লিতে, নিজামুদ্দিনে তবলিঘি জামাত ইজতেমার ধর্মীয় সম্মেলনে যোগ দিতে। লকডাউনের জেরে সেখানেই আটকে পড়েছেন বহু মানুষ। কিন্তু সংখ্যাটা যা ভাবা হয়েছিল, তার চেয়ে এতটাই বেশি যে চোখ কপালে উঠছে দুঁদে পুলিশকর্তাদেরও। পাঁচশো, হাজার নয়, একেবারে ২৩৬১ জন! মঙ্গলবার থেকে টানা ৩৬ ঘণ্টার অপারেশন চালিয়ে নিজামুদ্দিনের ওই এলাকার একটি বাড়ি থেকে এতজনকেই বের করে এনেছে পুলিশ। তল্লাশি শেষ হওয়ার পর আজ দক্ষিণ দিল্লি পুরনিগমের পক্ষ থেকে গোটা এলাকা স্যানিটাইজ করা হয়। যথাযথ সুরক্ষাবিধি মেনেই কর্মীরা সাফাইকাজ করেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে এখন দেশজুড়ে ওই সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের খুঁজে বের করতে মরিয়া বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশ কর্তারা।
মন্ত্রকের নির্দেশ পাওয়ার পরপরই এ রাজ্যের ৭১ জনকে চিহ্নিত করা হয়। তাঁদের মধ্যে ৩৯ জন বিদেশি-সহ ৫৩ জনকে হজ হাউসে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে সংশয় আরও বাড়িয়েছে দিল্লি পুলিশের তরফে প্রকাশিত একটি ভিডিও। যেখানে দেখা গিয়েছে, গত ২৩ মার্চ এই সমাবেশের উদ্যোক্তাদের ডেকে পুলিশের তরফে ওই এলাকায় খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। বোঝানো হয় যে লকডাউন চলছে। তার নিয়ম অনুযায়ী, এতজন একসঙ্গে এলাকায় থাকা যাবে না। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেননি এঁরা কেউ। অভিযোগ, বরং পুলিশের নির্দেশ উপেক্ষা করেই একসঙ্গে ছিলেন অনেকে। ২৩৬১ জনের হদিশ পেয়ে স্তম্ভিত পুলিশ।