নয়াদিল্লি: গত ২৪ মার্চ দেশজুড়ে লকডাউন জারি হতেই ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ভেসে উঠেছিল পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশার ছবি৷ ভবিষ্যতের অপেক্ষা না করে, লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক প্রখর রৌদ্রে মাইলের পর মাইল হেঁটে রওনা দিয়েছিলেন বাড়ির পথে৷ কেউ সফল হয়েছে, কারও বা সফর শেষ হয়েছে পথেই৷ একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটেছে সারা দেশে৷ এই পরিযায়ী শ্রমিকদের কষ্ট দেখে আতকে উঠেছে দেশের মানুষ৷ এমনভাবেই নিজের পাঁচ বছরের ছেলেকে কাঁধে চাপিয়ে দিল্লি থেকে রওনা দিয়েছিলেন দিনমজুর দয়ারাম কুশওয়া৷ তাঁর এই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়৷ কেমন আছেন তিনি?
জানা গিয়েছে, চারদিন টানা হাঁটার পর নিজের গ্রামে পৌঁছন কুশওয়া৷ সেখানে এখন গম কেটে যৎসামান্য যা উপার্জন হচ্ছে, তাই দিয়েই চলছে তাঁর সংসার৷ কুশওয়া বলেন, এখানে কাজের তেমন সুযোগ নেই৷ সব ঠিক হয়ে গেল ফের দিল্লি রওনা দেব৷ একই অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে ভারতে লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক৷
উত্তর দিল্লিতে নির্মাণ সংস্থায় ইট বহনের কাজ করতেন দয়ারাম কুশওয়া এবং তাঁর স্ত্রী৷ সন্তানকে পাশে বসিয়েই দিনরাত খাটত স্বামী-স্ত্রী৷ কিন্তু লকডাউন শুরু হতেই কনস্ট্রাকশন সাইটে কাজ বন্ধ হয়ে যায়৷ কাজ হারান দয়ারাম৷ দিল্লিতে কী ভাবে বাড়ি ভাড়া দেবেন, আর কী ভাবেই বা পরিবারের পেট চালাবেন? তাই ঠিক করেন পায়ে হাঁটেই বাড়ি ফিরবেন৷ শুরু হয় পথের সংগ্রাম৷ সঙ্গে না ছিল তেমন টাকা-পয়সা, না ছিল খাবার৷ কিন্তু থামার উপায় নেই৷ ছেলেকে কাঁধে বসিয়ে এগোতে থাকেন তাঁরা৷ অবশেষ পৌঁছন গ্রামে৷ শুধু দয়ারাম নয়৷ তাঁর মতো হাজার হাজার দয়ারামের কাহিনী লুকিয়ে রয়েছে ভারতের পথে-পথে৷
আজ, শনিবার কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের এক বছর পূর্তি হল৷ এদিন দেশবাসীর উদ্দেশ্যে লেখা এক চিঠিতেও খোদ প্রদানমন্ত্রীও স্বীকার করে নিয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশার কথা৷ তিনি বলেন, ‘সাংঘাতিকভাবে ভুগতে হচ্ছে’৷ আজ হয়তো পরিযায়ীদের জন্য স্পেশ্যাল ট্রেনের ব্যবস্থা হয়েছে৷ কিন্তু সেই স্মৃতিও খুব একটা সুখকর নয়৷ কষ্ট সহ্য করেই ফিরতে হচ্ছে তাঁদের৷