গুয়াহাটি: হিন্দু বৈবাহিক রীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল শাঁখা ও সিঁদুর৷ কিন্তু কোনও স্ত্রী যদি শাঁখা-সিঁদুর পরতে না চান, তাহলে ধরে নিতে হবে তিনি বৈবাহিক সম্পর্ককে অস্বীকার করছেন৷ তিনি আর স্বামীর সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ককে আবদ্ধ থাকতে চান না৷ সোমবার গুয়াহাটি হাইকোর্টে একটি বিবাহ বিচ্ছেদ মামলার শুনানির সময় এমনটাই জানালেন বিচারপতি৷ তাঁর এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে রীতিমতো শোরগোল বেধে গিয়েছে৷
প্রধান বিচারপতি অজয় লাম্বা এবং বিচারপতি সৌমিত্র সাইকিয়ার বেঞ্চ বলে, হিন্দু রীতি মেনে বিবাহিত মহিলারা শাঁখা-সিঁদুর পরেন৷ কিন্তু এই দুটি জিনিস পরতে না চাওয়ার অর্থ, স্ত্রী বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানটিকেই অস্বীকার করছেন৷ এক্ষেত্রে স্বামী তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতেই পারেন।
জানা গিয়েছে, ২০১২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বিয়ে হয় ওই দম্পতির৷ বিয়ের পর থেকেই সমস্যার সূত্রপাত৷ বিয়ের কয়েক মাস পরেই যৌথ পরিবারে থেকে বেরিয়ে আসতে চান ওই মহিলা৷ এই নিয়ে হামেশাই অশান্তি হত৷ এমনকী তিনি সন্তান নিতে চাননি বলেও স্বামীর অভিযোগ৷ ২০১৩ সাল থেকেই আলাদা থাকতে শুরু করেন তাঁরা৷ এর পর স্বামী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন ওই মহিলা৷ তাঁর উপর শ্বশুরবাড়ির লোকজন অত্যাচার করেছে বলে অভিযোগ আনেন তিনি৷ যদিও তাঁর এই অভিযোগের কোনও প্রমাণ নেই বলে জানিয়ে দেয় আদালত৷ শ্বশুরবাড়ি লোকদের নির্দোষ বলে রায় দেওয়া হয়৷
এরপর ওই মহিলার বিরুদ্ধে নৃশংসতার অভিযোগ তুলে বিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেন তাঁর স্বামী৷ ওই মামলাটিও খারিজ হয় যায়৷ আদালত জানান, স্বামীর উপর স্ত্রীর অত্যাচারের কোনও প্রমাণ মেলেনি৷ এর পর মামলা গড়ায় গুয়াহাটি হাইকোর্টে৷ সেখানে ওই ভদ্রলোক অভিযোগ করেন, তাঁর স্ত্রী শাঁখা-সিঁদুর পরেন না৷ এর পরই আদালত জানান, শাঁখা-সিঁদুরকে অস্বীকার করার অর্থ বৈবাহিক সম্পর্ককে অস্বীকার করা৷ এই পরিস্থিতিতে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে থাকলে স্বামীর অপদস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়৷ তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ মঞ্জুর করে দেয় আদালত৷