এবার যেতে দিতে হবে.. (Ratan Tata’s Dog Funeral Goa)
দিল্লি: রতনের কফিন আঁকড়ে পোষ্য গোয়া!
এটাই শেষ দেখা, নিথর দেহের পাশে ঠায় বসে ওই চারপেয়ে! শেষকৃত্যে রতন টাটার প্রিয় সারমেয় যা করল তাতে চোখে জল আসতে বাধ্য।
আনকন্ডিশনাল লাভ। একেই বলে নিঃশ্বার্থ ভালবাসা। যখন সাদা ফুলে ঘেরা কফিনে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে রতন টাটা। তখন তাঁর প্রিয়জনেরা বুঝতে পেরেছে এবার যেতে দিতে হবে।
কিন্তু অবলা প্রাণীটা এতোকিছু বোঝেনা। রতনের প্রিয় গোয়ার মনে, তখন শুধু একটাই প্রশ্ন। আজ তার কাছের মানুষটি কেন চুপটি করে ঘুমিয়ে আছে? একটিবারের জন্য আদর করছে না কেন? তাই গোয়া এগিয়ে গেল। তারপর যা করল তা শুধু ক্যামেরার লেন্সে নয়। বন্দী হয়ে থাকলো হাজার, লক্ষ, কোটি মানুষের মনে, হৃদয়ে।
দৃশ্যটা বোধহয় থেকে যাওয়ার (Emotional Farewell)
ফুল সরিয়ে অবিরাম লেজ নাড়তে নাড়তে এতদিনের বন্ধুকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা। শেষযাত্রায় রতন টাটা আর তাঁর প্রিয় পোষ্য গোয়ার এই স্নিগ্ধ সম্পর্কের দৃশ্যটা বোধহয় থেকে যাওয়ার।
এই সম্পর্ক তো আজকের নয়। গোয়ার সঙ্গে রতন টাটার সম্পর্কের শুরু বহু বছর আগে। ‘গোয়া’কে খুঁজে পাওয়ার পিছনে রয়েছে এক মজাদার কাহিনী। সেই বার গোয়ায় গেছিলেন দেশের এই বিসনেস টাইকুন। হঠাৎই এক পথ কুকুর তাঁর পিছু নেয়। আপাত দৃষ্টিতে বিষয়টি সাধারণ মনে হলেও সেই মায়া ভরা চোখ এড়িয়ে যেতে পারেননি টাটা। সিদ্ধান্ত নেন তাকে সঙ্গে নিয়েই মুম্বই ফিরবেন। ওই চারপেয়েকে নিয়ে আসবেন বাড়িতে। যেমন ভাবা তেমন কাজ।
মুম্বইয়ের বাড়িতে আনা হয় তাকে। গোয়ায় দেখা, তাই সারমেয়টির নাম রাখেন গোয়া। তারপর কেটে গেছে ১১ বছর। রতন টাটার পরিবারেরই এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে গোয়া। গতকালের শেষ যাত্রার ছবিও সেই কথাই বলে। সেই যে পিছু নিয়েছিল গোয়া, যেন আজও ছাড়তে চায় না।
কী করেননি তিনি? (The Unbreakable Bond: Ratan Tata and His Loyal Dog)
সেটাই তো স্বাভাবিক। সারমেয়দের ভালবেসে জীবনে অনেক কিছু খুব সহজেই ছেড়ে দিয়েছেন রতন টাটা। ২০১৮ সালে সামাজিক কাজের জন্য তাঁকে ইউকে রাজপরিবার লাইফটাইম অ্যাওয়ার্ডের জন্য আমন্ত্রণ জানালেও পোষ্যদের অসুস্থতার কারণে সেই অনুষ্ঠানেও যাননি তিনি।
রতন টাটার পশুপ্রেম সকলের জানা। টাটা গ্রুপের গ্লোবাল হেডকোয়ার্টারে পথ কুকুরদের জন্য একটি ক্যানেলই তৈরি করা রয়েছে। এছাড়াও পথ কুকুরদের জন্য হাসপাতাল থেকে বর্ষার সময় তাদের থাকার জায়গার বন্দোবস্ত, কী করেননি তিনি?
শুধু গোয়া নয়। ‘গোয়ার’ মতো একাধিক পোষ্য রয়েছে তাঁর বাড়িতে। তাঁদের কাছে টাটা গ্রুপের প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিশ্বের সেরা একজন শিল্পপতি নন। রতন টাটা ওদের কাছে খুব প্রিয় বন্ধু। সেই বন্ধুকে হারিয়ে আজ অবলা প্রাণগুলোর জগৎ যেন অন্ধকার। ওরা যে ভালবাসা আঁকড়েই বাঁচে।
চির বিদায়? (A Final Goodbye: Celebrities and Friends Pay Tribute)
সেই ভালবাসার মানুষটাই রইল না। আজ বন্ধু নেই। এরপর থেকে দুষ্টুমি করলে বকা দেওয়া, পরক্ষণেই কাছে টেনে আদর করা। না, আর পাবেনা গোয়ারা ওই ভালবাসা। ভারত হারাল রতনকে। আর ওরাও হারাল প্রিয়জনকে।
তাই বোধহয় এদিন কাঁচ বন্দি মালিকের নিথর দেহ শায়িত দেখে কাছে এগিয়ে গেছিল চারপেয়ে গোয়া। হয়তো বা বন্ধুকে অনেক না বলা কথা জমা থেকে গেল গোয়ার মনে। চোখে মুখে তখনো যেন কিছু বলার চেষ্টা। কে চায় প্রিয় মানুষটিকে জানাতে, চির বিদায়?
আরও পড়ুন..
“ভালো ছেলের মতো..” বলবেন না রতন! পিতৃহারা গোয়া-স্প্রাইটরা
National – Ratan Tata‘s Dog Funeral Goa : Ratan Tata’s loyal dog says goodbye; attends funeral in Goa. Heartwarming moments from the farewell ceremony. Read more about their special bond.