এবার সোনার দামে কিনতে হবে আলু-পেঁজায়-ডাল-তেল? ‘একুশে’ আইন পাস কেন্দ্রের

এবার সোনার দামে কিনতে হবে আলু-পেঁজায়-ডাল-তেল? ‘একুশে’ আইন পাস কেন্দ্রের

 

নয়াদিল্লি: অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের তালিকা থেকে আলু-পেঁয়াজ, তৈলবীজের মতো গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপণ্যকে বাতিল খাতায় ফেল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর সরকার৷ একধাক্কায় আলু, পেঁয়াজ, ডাল, তৈলবীজ ও দানাশস্য, ভোজ্য তেলকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে রাজ্যসভায় অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনে সংশোধন এনে বিল পাস কারাল বিজেপি সরকার৷ 

নয়া বিল কার্যকর হওয়ায় এই পণ্যগুলি বাজার বুঝে দাম হাঁকানোর বিষয়ে ব্যবসায়ীদের কার্যত সার্টিফিকেট দিচ্ছে কেন্দ্র৷ আলু-পেঁয়াজ, তৈলবীজের মতো গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপণ্যকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার ছাড়পত্র আগেই দিয়েছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা৷ এবার গোটা বিষয়টি আইনে রূপান্তর ঘটাতে রাজ্যসভায় কেন্দ্রের নয়া বিল পাস ঘিরে সিঁদুরে মেঘের আশঙ্কা করছেন সাধারণ জনতার একাংশ৷ কেননা, এই বিল রাজ্যসভায় পাস হয়ে যাওয়ার কারণে এবার এই সমস্ত পণ্য ইচ্ছেমতো মজুত, বিক্রি করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা৷ থাকবে না কোনও সরকারি বিধিনিষেধ৷ আলু, পেঁয়াজ, ডাল, তৈলবীজ ও দানাশস্য, ভোজ্য তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকবে না সরকারের হাতে৷ আর তাতেই এক লাফে দেশ ও বাংলার বাজারে আরও বাড়তে চলেছে আলু-পেঁয়াজ-তেল-ডালের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের দাম৷

করোনার আবহে দীর্ঘ লকডাউনের কারণে কমবেশি অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছেন সাধারণ জনতা৷ এবার তার মাঝেই বিপদ বাড়িয়ে তাণ্ডব চালিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় আমফান৷ ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে লাফেলাফিয়ে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম৷ এবার কেন্দ্রের নয়া বিল পাস পাওয়ায় তেল ও আলুর দাম অত্যবশ্যকীয় না হওয়ায় বাজারে তার প্রভাব পড়তে চলেছে৷  অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের তালিকা থেকে আলু-তেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপণ্য বাদ দেওয়ায় আরও বাড়বে দাম৷ এমনিতেই আলু-পেঁয়াজ এখন ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে৷ কেন্দ্রের নয়া আইনে তা ১০০ টাকা হয়ে গেলেও দায় থাকবে সরকারের৷ সাধারণ জনতার পকেট কেটে মুনাফা লুটতে সরকারি ছাড়পত্র পেয়ে যাবে ব্যবসয়ীরা৷ অভিযোগ বিরোধীদের৷

এই মুহূর্তে আলুর দাম কয়েক দিন ধরে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে৷ কিছুদিন আগেও যে আলুর দাম ২০ থেকে ২২ টাকা সর্বোচ্চ দরে বিক্রি হচ্ছিল, তা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ টাকার কাছাকাছি৷পেঁয়াজের দামও ৪০ টাকার কাছাকাছি৷ সব ধরনের তেলের দাম ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছে৷ দীর্ঘ লকডাউনের কারণে ইতিমধ্যেই কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ৷ বেসরকারি ক্ষেত্রে ছাঁটাই পর্ব শুরু হয়ে গিয়েছে৷ কমে গিয়েছে বেতন৷ দীর্ঘ লকডাউনের কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে দেশের অর্থনীতি৷ নতুন করে নিয়োগ কার্যত লাটে উঠেছে৷ আর এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সবজির বাজারে অগ্নিমূল্য৷ তাতেই মাথায় হাত সাধারণ জনতার৷

নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে খাদ্যশস্য, ডাল ও ভোজ্যতেল, আলু-পেঁয়াজের মতো গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপণ্য৷ এখন থেকে এই সমস্ত পণ্যের দাম যাচাই করে বিক্রি বা মজুত করবেন কৃষিজীবীরা৷ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনে সংশোধন করে কেন্দ্রের নয়া আইন, আমজমতার পকেট আরও ফাঁকা করার পক্ষে যথেষ্ট বলেই মনে করছে বিরোধী শিবির৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী দিনে খাদ্য মহামারী দেখা দেবে৷ এই নিয়ে তৃণমূল মাঠে নামবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন৷ কিন্তু, দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার কি আদৌও কোনও ব্যবস্থা নেবে? লাখটাকার প্রশ্ন সাধারণ জনতার৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 3 =