নয়াদিল্লি: কৃষক আইন নিয়ে কেন পৃথকভাবে আলোচনা হচ্ছে না, তার প্রতিবাদে শুক্রবার লোকসভায় বাজেট নিয়ে ‘স্পিকটি নট’ কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। শত বাধা সত্ত্বেও এদিন তিনি তিনটি কৃষক আইনের বিষয়বস্তু ও তার উদ্দেশ্য নিয়ে কথা বলেন। কিন্তু বাজেট নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পাশাপাশি, মোদি সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি এও বলেন, “ভারতের সরকার এখন চলছে চারজনের হাতে। হাম দো, হামারে দো।”
শুক্রবার লোকসভায় সম্প্রতি পেশ হওয়া বাজেট নিয়ে আলোচনা করার কথা ছিল। কিন্তু বিরোধী দলনেতা কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী বক্তৃতা দেওয়ার জন্য উঠেই কৃষক আইন নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন। প্রধানমন্ত্রী নিজের বক্তব্যে বলেছিলেন, কৃষক আইনে সমস্যাটা ঠিক কী নিয়ে সেটা পরিষ্কার করে বলছে না বিরোধীরা। এদিন তাই নরেন্দ্র মোদিকে ‘খুশ’ করতেই প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি তিনটি কৃষক আইনের বিষয়বস্তু ও উদ্দেশ্য নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছিলেন। বক্তৃতা যত এগিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের সাংসদরা এর তুমুল বিরোধিতা করেছেন। বাজেট নিয়ে কথা বলার অধিবেশনে কেন কৃষক আইন নিয়ে কথা বলছেন রাহুল গান্ধী, এই নিয়ে জোর প্রতিবাদ করেছেন কংগ্রেস বিরোধী সাংসদরা। উত্তাপ বেড়েছে সংসদের।
কংগ্রেস বিরোধী সাংসদদের শত বাধা সত্বেও শুক্রবার তিনটি কৃষক আইন আলাদা আলাদা করে তুলে ধরেছেন রাহুল। বলেছেন, “এই আইনগুলি চালু হলে মান্ডিগুলি ধ্বংস হয়ে যাবে। ছোট চাষী ও ছোট ব্যবসায়ীরা ব্যাপকহারে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কৃষিপণ্যের দামও অনেকটা বাড়বে।” এদিন মোদি সরকারকে তুলোধোনা করে রাহুলের বক্তব্য, “বেশ কিছু বছর আগে দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার থেকে একটি সচেতনতামূলক লাইন তৈরি করা হয়েছিল। ‘হাম দো, হামারে দো’। সেই লাইন এই সরকারের জমানায় নতুনভাবে ফিরে এসেছে। দেশে এখন ‘হাম দো হামারে দো’-এর হাতে সরকারের রাশ। দুজন ব্যবসায়ীর স্বার্থেই এখন সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। চারজন লোক মিলে দেশ চালাচ্ছে।”
কৃষকদের আন্দোলন নিয়েও এদিন কথা বলেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি। তিনি জানান, “কৃষকরা তাদের আন্দোলন থেকে এক ইঞ্চিও পিছু হটবে না। সরকারকে তারা পিছু হটতে বাধ্য করবে। কিন্তু নিজেরা এক চুলও নড়বে না।” নিজের বক্তৃতা শেষে কৃষক আন্দোলনে এখনো পর্যন্ত নিহত প্রায় ২০০জন কৃষকের স্মৃতিতে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন রাহুল গান্ধী।